দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানুষের পাশাপাশি কথা বলতে না পারা অবলা প্রাণী কুকুর গুলো সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছে। বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট বন্ধ থাকার কারণে প্রাণীগুলো পড়েছে খাদ্য সংকটে।
এই সংকট ময় সময়ে দিনাজপুর সদর উপজেলার শহরের কালিতলা পোস্ট অফিস এলাকার আফসানা ইমু নামের এক সেচ্ছাসেবী নারী করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোদ, বৃষ্টি পরোয়া না করে স্কুটি চালিয়ে অভুক্ত পথশিশু, মানুষিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তি ও কুকুরদের মাঝে খিচুড়ি, বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি।
তার এই কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে আফসানা ইমু বলেন, আমি গত ২৯ মার্চ থেকে বোবা পশুদের একা খাবার দেওয়া শুরু করি। আমি আমার ইছকুটিতে করে তাদের মাঝে খাবার বিতরণ করে বেড়াতাম। প্রতিদিন দিতে পারতাম না এক দিন পর পর কখনো রুটি কখনো বিস্কুট কখনো খিচুড়ি এই ভাবে দিতাম প্রায় ১৬ দিন এ ভাবে পাড় হয়ে গেলো, তখন আমি খুব চিন্তা করছিলা আমি কি ভাবে চালিয়ে যাবো পশু গুলি তো আমাকে চিনে গেছে আমি যখন প্রথম দেই তখন ওরা খুব কষ্টে ছিলো তারপর আস্তে আস্তে ভালো অবস্থায় গেলো। এই চিন্তা করতে করতে হঠাৎ সাংবাদিক মোমিন ভাই নিজে থেকে আমার কার্যক্রমের একটা ছবি দিয়ে পত্রিকায় প্রচার করেন। তখন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তা দেখে আমার দাদু ভাই দিনাজপুর নাগরিক উদ্যোগ ও দিনাজপুর সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ কে বলেন এটা চালিয়ে যেতে তিনি আমাদের সাহায্য করে সেই সাহায্য নিয়ে আজ ও তাদেরকে খাওয়াচ্ছি আমরা। তারপর আমার কাজ দেখে আমার কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় দোলা নামে একটা মেয়ে। তারপর ওকে নিয়ে কাজ করি ও আমাদের খুব কাছের মানুষ। তারপর আমার টিমে আসে হাজীদানেস এর ঐ খানে বাসা মুরাদ আর মারুফ এদের কে নিয়ে কিছু দিন কাজ করতে ওরা আর আসতে পারে না ওরা তখন ঐখানে কাজ করে এই ভাবে আস্তে আস্তে এই টিম হয়।
তিনি আরো বলেন, আর পাগল দের খাবার দেখে আমার বিবেক নারা দেয় এক জন মানুষ আমার কুকুরের খাবার টা চেয়ে খেয়েছে আমি বলেছি কুকুরের খাবার তারপর ও খেয়েছে কারন সে বলেছে জীবন বাঁচাতে হবেএই কারনে আমি নিজেই খাওয়াতে শুরু করি অনেক এ যার যা হয়েছে দিয়েছে এই ভাবে আমি চালিয়ে যাচ্ছি কারো কাছে কিছু চাইনি যানি না আল্লাহ্ শেষ পযন্ত এই পাগল মানুষের খাবার দিতে পারবো কি না। তবে আল্লাহ'রহমতে এখন পযন্ত তাদের খাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, আমার উদ্দেশ্য ছিলো সবাই যেনো আমাকে দেখে এগিয়ে আসে এদের পাশে। বর্তমানে ঠিক তাই হয়েছে এটাই আমার চাওয়ার ছিলো আর কিছু না। তবে আমার মতে অনেকে এই কাজে এগিয়ে আসতে চাইছিলো হয়তো সাহস পায়নি এখন অনেক মানুষ এই কাজ করছে অনেক মানুষ। তারা যখন বলে আপনাকে দেখে আমরা এই কাজ করছি তখন আমার খুব ভালো লাগে। আমি ও আমার টিম সব সময় অসহায়দের বন্ধু হয়ে পাশে থাকব কোন সার্থ ছারা। দিনাজপুরে যতো বোবা পশু আছে আমাকে ও আমার টিম কে সবাই চিনে, আমাদের দেখলে তারা ছুটে আসে আমাদের কাছে, এ টাই আমার পাওয়া অসহায় মানুষগুলো দোয়া করে এটাই আমার ও আমরা টিমের পাওয়া।
তিনি বলেন, এদের খাওয়ানোর আগে আমরা সমাজের মানুষদের জন্য কাজ করেছি। করোনা ভাইরাসের কারনে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিনাজপুর সদর উপজেলা শহরে মাইক দিয়ে সবাই কে সচেতন করানো, নিজেরা দোকানে দোকানে বোতল চেয়ে 200 বতোল হাত ধোয়ার হেন্ডওয়াস বানিয়ে তিন দিন সবাই কে দিয়েছি।তারপর দোকানে দোকানে গোল দাগ দিয়েছি এটা আমরা করেছি প্রথম তারপর এই কাজে সবাই এগিয়ে এসেছে তারপর আমি চলে গেলাম পশু আর পাগল দের পাশে।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আমি এই কাজে নতুন না আমি আমার বুদ্ধি বিবেক হওয়ার পর থেকে এই কাজ করি। আজ আমার এই সব কাজের ছবি দেখেছেন তাই সবাই যেনেছেন। তবে ছবি দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল এই দূর্যোগময় সময়ে সবাই যেনো এই সব কাজে এগিয়ে আসে।আমার জীবনের একটা শখ আমি অসহায় মানুষের পাশে থাকবো এই ভাবেই,এটাই আমার সপ্ন।আমি ছোট থেকে আমার বাবা মা কে দেখে এই কাজ শিখেছি এবং আমার সামি আর আমার শশুর বাড়ি মানুষদের সহযোগিতা পেয়ে আজ ২৪ বছর ধরে এই কাজ টা করতে পারছি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪