স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ যেন এক ফুলের রাজ্য, এখানে এলে যে কারো মন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠবে। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙের সূর্যমুখী ফুল।
ভোর হলেই সোনা রোদে চোখ মেলে ঝলমলে সূর্যমুখী। নীল আকাশের সঙ্গে হলুদ ফুলগুলোর মায়াবি রূপ যে কারো মনকে নাড়া দিতে বাধ্য। বাগানে প্রতিদিন বসে প্রজাপতি আর মৌমাছির মেলা। নয়ন জুড়ানো এ দৃশ্যে মুগ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
দিনাজপুর শহরের অদূরে উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগের মাঠে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর মায়াবী হাঁসি। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে গেলে চোখে পড়ে শত শত সূর্যমুখী ফুল। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার।
সূর্যের দিকেই সূর্যমুখী ফুলের মুখিয়ে থাকার এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে নিজেকে ক্যামেরা বন্দী করার লোভ সামলানো দায়।বাগানে প্রবেশ করলেই মনে হবে- হলুদের আভায় চারিদিকেই যেন ছড়িয়ে আছে অপার মুগ্ধতা। সবুজ মাঠ আর হলুদের ফুলের ওপর মৌমাছি আর পাখির আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের গবেষণা মাঠে সূর্যমুখী নিয়ে গবেষণা করছেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান খন্দকার স্মরণ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম সিকদারের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি করতেছেন। গবেষণার বিষয় " সূর্যমুখী উৎপাদন ও ফলন এর উপর জৈব ও রাসায়নিক সারের প্রভাব "।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মাঠে শিক্ষার্থী স্মরণ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান "বর্তমান সরকার ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূর্যমুখী চাষের ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে কাজ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমনকি ইদানিং সময়ে আমাদের দেশে ভোজ্য তেল হিসেবে এই তেলের চাহিদা বেড়ছে।আমার মাস্টার্স এ ইচ্ছে ছিল কিছুটা ভিন্নরকম কাজ করার। যেহেতু সূর্যমুখী এখন আমাদের দেশের জন্য রাইজিং একটা ফসল তাই এটা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ টা বেড়ে গেছে। সর্বোপরি আমার সুপারভাইজার স্যারের পরামর্শে এটা নিয়ে কাজ করতেছি "।
সূর্যমুখী নিয়ে গবেষণা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার গবেষণার জন্য চাষকৃত সূর্যমুখীর জাত হল বারি সূর্যমুখী -২। সূর্যমুখীর তেলের চাহিদা দিন দিন দেশ ও দেশের বাইরে বেড়েই চলছে। সূর্যমুখী নিয়ে গবেষণার মূল কারন হচ্ছে আমাদের দেশে এই ফসলের চাষে যেন কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়।সূর্যমুখী তেলের মধ্যে প্রোটিন এর অনুপাত আমাদের দেশের অন্য সব ভোজ্য তেলের থেকে অনেক বেশি। আমাদের দেশে হৃদরোগী, উচ্চ রক্তচাপের রোগী, ডায়াবেটিস রোগী, কিডনি রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে যাদের জন্য বর্তমান বাজারের ভোজ্য তেল গুলো শরীরের জন্য খুব খারাপ প্রভাব ফেলতেছে।যেখানে সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সূর্যমুখী তেলের মধ্যে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ যেমন বেশি তেমনি এই তেলের রান্নাও সুস্বাদু। বাজারে এই তেলের চাহিদা যেভাবে বাড়তেছে এই সময়ে আমাদের দেশের কৃষকরা এই ফসল চাষ করলে অর্থনৈতিক ভাবে অনেক উপকৃত হবে। মুলত এসব ভাবনাই এই ফসল নিয়ে গবেষণার কাজে আমাকে আগ্রহী করেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪