দিনাজপুর বার্তা ২৪.কম ডেস্ক ॥ কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের চিত্রকর্ম আত্মসাতের অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। মঙ্গলবার সকালে তিনি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহের আফরোজ শাওন। এদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৯ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে রুমা চৌধুরী ও তার স্বামী মঞ্জুরুল আজিম পলাশকে। শাওনের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন এবিএম হামিদুল মিজবাহ। মামলার এজাহারে বলে হয়েছে, ২০১২ সালে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য আমেরিকার নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় গিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সেখানে তিনি পুত্র নিষাদকে নিয়ে বেশ কিছু ছবি এঁকেছিলেন। ওই সময়ে রুমা চৌধুরী ও তার সাবেক স্বামী বই ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। সে সূত্রে হুমায়ূন আহমেদ তার আঁকা ২৪টি ছবি তাদেরকে দেন প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য। শর্ত ছিল প্রদর্শনী শেষে তারা ছবিগুলো হুমায়ূন আহমেদের কাছে ফেরত দিবেন। ছবিগুলো বিক্রির জন্য হুমায়ূন আহমেদকে প্রস্তাব দিলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ছবিগুলো তিনি এঁকেছেন তার নিজের এবং পুত্র নিষাদের আনন্দের জন্য। বিক্রি করে অর্থ লাভের জন্য নয়। এ সময়ে রুমা চৌধুরী বলেন, তাদের দেওয়া হয়েছিল ২১ টি ছবি। যার মধ্যে একটি ছবি হারিয়ে গেছে। অথচ আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি ও হুমায়ূন আহমেদ গুণে গুণে ২৪ টি ছবি দিয়েছি তাদের। ২০১৩ সালে অভিনেতা ও তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তির সহায়তায় তারা ২০টি ছবি ফেরত দেন হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজের জিম্মায়। মেহের আফরোজ শাওন বলেন, ফেসবুকে মঞ্জুরুল আজিম পলাশ গত ৩১ মার্চ কুমিল্লায় লিংকবাংলা শিল্প প্রদর্শনীর বিজ্ঞাপন দেন। ১ থেকে ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে একটি ছবি হুমায়ূন আহমেদের আঁকা ছবি ছিল। যে ছবিটি হুমায়ূন আহমেদের আঁকা হারিয়ে যাওয়া চারটি ছবির একটি বলে প্রতীয়মান হয়। যেটার ক্যাটালগ আমার হাতের আসে। আমি দেখেই চিনে ফেলি যে এটা সেই ছবি যেটা হারিয়ে গেছে বলে আমাকে জানানো হয়েছিল। আমি ছবিটি ফেরত পাওয়ার জন্যই মামলা করেছি। আর যেহেতু একটি ছবি তাদের কাছে আছে, তাহলে বাকি তিনটি ছবিও রয়েছে তাদের কাছে। প্রমাণিত হয় রুমা চৌধুরীর যোগসাজশে মঞ্জুরুল আজিম পলাশ ছবিগুলো অসাধুভাবে আত্মসাৎ করেছেন। যা দন্ডবিধির ৪০৬/৪১১/৪২০/৩৪ দ্বারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এজাহারে বলা হয়, হুমায়ুন আহমেদের অঙ্কিত ছবিগুলোর মূল্য শৈল্পিক বা আর্থিক নিক্তিতে পরিমাপ করা সম্ভব না। যা হুমায়ুন আহমেদের জীবনের শেষ দিনগুলোতে তার সাথে পুত্র নিষাদের কাটানো সময়ের স্মৃতি বিজড়িত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাওন বলেন, আসামিদের কাছ থেকে ছবিগুলো উদ্ধার করা না গেলে তা বেহাত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর এতে শুধু প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের পরিবারই নয়, সর্বোপরি দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এসব হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের হাতেই ফিরে আসা উচিৎ। আর এজন্যই আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪