পার্বতীপুর সংবাদদাতা ॥ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বর্তমান যখন কর্মহীন মানুষের জীবন-জীবিকা দিশেহারা হয়ে পড়েছে, ঠিক তখন পাথর উৎপাদনের চাকা সচল রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জিটিসি খনি কর্তৃপক্ষ চলতি এপ্রিল মাসেই প্রায় ২০ কোটি টাকার রেকর্ড পরিমাণ পাথর বিক্রি করেছে। এতে লাভজনক অবস্থা অব্যাহত রেখেছে। ফলে দেশের একমাত্র দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনির অর্থনীতিতে করোনায় অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েনি। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউন শুরু হলেও খনি শ্রমিক এবং পাথর পরিবহনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত এলাকার তিন সহস্রাধিক মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা করোনার কারণে খনি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন। কর্মহীন হয়ে পড়ার শঙ্কায় ছিলেন শতাধিক শ্রমিক। কিন্তু পাথর উত্তোলন ও বিক্রি চালু স্বাভাবিক রাখায় সব আশঙ্কা দূর হয়েছে তাদের। দেশের উন্নয়নে উন্নতমানের পাথর ব্যবহারের কথা ভেবে তিন শিফটে মধ্যপাড়া খনির পাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি। পাথর উত্তোলন অব্যাহত থাকায় পাথর বিক্রিও বেড়েছে। তাই প্রতিদিন ভোর থেকে খনির মেইন গেটের সামনে প্রধান সড়কে শত শত ট্রাক পাথর নিতে লাইন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে। বর্তমানে প্রতিদিন বিক্রিত পাথর দুই শতাধিক ট্রাক খনি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পাথর বহন ও ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত খনি এলাকা। এই খনিকে কেন্দ্র করে খনি এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকান।
খনি সূত্র জানা গেছে, বর্তমানে বিভিন্ন ইয়ার্ডে পাথর মজুদ রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন। জিটিসি কর্তৃক রেকর্ড পরিমাণ পাথর উত্তোলনে খনির বিভিন্ন ইয়ার্ডে মজুদ থেকে চলতি মাসে পাথর বিক্রি আগের পাথর বিক্রির রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। পাথর বিক্রি আশাতীত হওয়ায় চলতি অর্থবছরেও (২০২০-২১) তৃতীয়বারের মতো মধ্যপাড়া পাথর খনি লাভজনক হবে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আবারও গত দুই অর্থবছরের মতো প্রফিট বোনাস পাবেন বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (ইউজিওঅ্যান্ডএম) আবু তালেব ফরাজী বলেন, এপ্রিল মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত পাথর বিক্রি হয়েছে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন, যার আনুমানিক মূল্য ২০ কোটি টাকা। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানায় করোনায় কোনো সমস্যা হয়নি এখানে। খনি থেকে গড়ে প্রতিদিন পাথর উত্তোলন হচ্ছে ৪ হাজার মেট্রিক টন এবং বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত খনির বিভিন্ন ইয়ার্ডে মজুদ রয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন পাথর। গত দুই বছর থেকে খনিটি লাভজনক রয়েছে এবং অব্যাহত থাকবে আশা করা যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪