দিনাজপুর বার্তা২৪ ডেক্স: বর্তমানে বেশিরভাগ নারীদেরই ঘরের এবং বাহিরের কাজ করতে হয়। প্রায়ই কাজের অনেক বড় তালিকা করতে হয় নারীদের যার মধ্যে তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়টি থাকে না। অথচ বয়োবৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে থাকে। যেকোন স্বাস্থ্যসমস্যা প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা যায় নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালে। নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে মনোযোগী হলে অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা এড়ানো যায় এবং এতে যন্ত্রণা, সময় ও টাকা বাঁচানো যায়। যেখানে আপনার চিকিৎসকও বলতে পারেন না যে আপনি কী সমস্যায় ভুগছেন সেখানে কিছু টেস্ট আছে যার মাধ্যমে আপনার মারাত্মক কোন স্বাস্থ্য সমস্যাও প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা যায়। ৩৫ এর বেশি বয়সের নারীদের যে স্ক্রিনিং টেস্টগুলো করানো উচিৎ সেগুলোর বিষয়েই জানবো আজকের ফিচারে।
১। শ্রোণী অঞ্চলের পরীক্ষা এবং প্যাপ স্মিয়ার
৩০ বছর বয়সের পর থেকেই নারীদের নিয়মিত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়া উচিৎ এবং সম্পূর্ণ শ্রোণী অঞ্চলের পরীক্ষা করানো উচিৎ এবং সেই সাথে প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট/ প্যাপ টেস্ট ও করানো উচিৎ। নারীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ সারভিকেল ক্যান্সার। সম্প্রতি সারভিকেল ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। টিকা নেয়ার পরও নিয়মিত চেকআপ করানো উচিৎ।
২। ম্যামোগ্রাম
স্তন ক্যান্সার নারীদের মৃত্যুর আরেকটি প্রধান কারণ। যেহেতু বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় তাই চল্লিশোর্ধ্ব নারীদের বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করানো উচিৎ। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করা গেলে নিরাময় লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৩। হাড়ের ঘনত্ব নির্ণয়ের টেস্ট
অষ্টিওপোরোসিস হলে হাড়ের অত্যাবশ্যকীয় খনিজ উপাদান ক্যালসিয়াম হাড় থেকে বের হয়ে যায় এবং হাড়কে দুর্বল ও ভঙ্গুর করে দেয়। ৮০ শতাংশ নারীই এই সমস্যায় ভুগে থাকে এবং মেনোপোজ হওয়ার পরেই নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায় হাড়ের সমস্যা। ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে হাড়ের সমস্যা। বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট মেনোপোজ পরবর্তী নারীদের এবং যাদের একবার ফ্র্যাকচার হয়েছে তাদের করতে বলা হয়। ৩৫ বছর বয়সের নারীদের প্রতি ৫ বছর পর পর এই টেস্ট করানোর পরামর্শ দেয়া হয়।
৪। থাইরয়েড টেস্ট
অনেক নারীই অনাকাক্সিক্ষত ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়ে যাওয়া, নখ ভাঙ্গা এবং অবসাদে ভুগার অভিযোগ করে থাকে। এর কারণ নিষ্ক্রিয় থাইরয়েড গ্রন্থি অথবা হাইপোথাইরয়ডিজম। এই গ্রন্থি থেকে ঞ৩, ঞ৪ ও ঞঝঐ হরমোন নির্গত হয় এবং এটি শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। এই হরমোনের যেকোন ধরনের পরিবর্তনের কারণে শরীরে মারাত্মক পরিবর্তন হতে পারে। ৩৫ বছর বয়সের নারীদের প্রতি ৫ বছর অন্তর অন্তর করানো উচিৎ এই পরীক্ষা।
৫। ডায়াবেটিস স্ক্রিনিং
ডায়াবেটিস এবং প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয়ে সাহায্য করে ব্লাড সুগার টেস্ট। নারী স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস অনেকবেশি প্রভাব ফেলে এবং দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার সৃষ্টি করে। গ্লুকোজের বিপাকের ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতা নির্ণয়ের জন্য ব্লাড গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট করানো হয়।
৬। লিপিড প্রোফাইল টেস্ট
এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভালো এবং খারাপ কোলেস্টেরলের এর মাত্রা নির্ণয় করা হয়। কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বির অণু যা অতিরিক্ত পরিমাণে হলে রক্তনালীতে জমা হতে থাকে এবং এর ফলে হৃদপি-, রক্তনালী ও মস্তিস্কের উপর প্রভাব পড়তে পারে। ৩০ বছরের পড়ে প্রতিটা নারীরই ৫ বছর পর পর এই পরীক্ষাটি করানো উচিৎ।
৭। ভিটামিন ডি টেস্ট
হাড়ের বৃদ্ধি এবং এর গঠন ঠিক রাখার জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান ভিটামিন ডি প্রয়োজন। এছাড়াও এটি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার হতে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। ইমিউন সিস্টেমের উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। ফ্যাটি ফিস এবং ফরটিফাইড ডেইরী প্রোডাক্ট ভিটামিন ডি এর ভালো উৎস। ভিটামিন ডি টেস্ট করানোর জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। আপনার বাহুতে ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪