দিনাজপুর বার্তা২৪.কম॥ বাংলাদেশের পুরনো বন্ধু অস্ট্রিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে দুই দেশ যৌথভাবে নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ভিয়েনায় অস্ট্রিয়ান ফেডারেল চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান কের্নের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমরা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে কৃষি, প্রাণিসম্পদ, সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ খাত যৌথভাবে চিহ্নিত করেছি। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের মতো বৈশ্বিক বিষয়েও আমাদের মধ্যে মতবিনিময় হয়েছে।
সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশনের ৬০ বছর পূর্তির সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ হাসিনা সোমবার অস্ট্রিয়া যান। মঙ্গলবার সকালে ভিয়েনা সম্মেলন কেন্দ্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এর পর অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। যৌথ সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য চ্যান্সেলরকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রিয়ার ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রুনো ক্রায়েস্কির নেতৃত্বে অস্ট্রিয়ার সরকার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংহতি জানিয়েছিল এবং ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ২০১২ সালে চ্যান্সেলর ক্রায়েস্কিকে মরণোত্তর ‘মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সম্মাননা’ দেওয়ার কথা এসময় তিনি তুলে ধরেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধান হিসেবে অস্ট্রিয়া সফরে গেলেন শেখ হাসিনা। এর আগে ১৯৬৯ সালে প্রথম পর্যটক হিসেবে এবং ৯৩ সালে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে পূর্ব ইউরোপের এই দেশ সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে লিঙ্গ সমতায়ন ও সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যে (এমডিজি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অর্জনের মধ্যে তার প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বজুড়ে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃত। আমরা এই বছর ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার হয়েছে জানিয়ে উদাহরণ হিসেবে ২০১৪ সালে ভিয়েনায় আবাসিক মিশন খোলার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার এই সফরে সম্পর্ক জোরদারে নতুন মাত্রা যোগ হবে। বিশ্বজুড়ে চলমান অভিবাসন ও শরণার্থী সমস্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না, আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে পথ খুঁজতে হবে। এই ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে অস্ট্রিয়ার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার জন্য চ্যান্সেলর কের্নের প্রতি আহ্বান জানান।
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলরকে বাংলাদেশের আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন কাছাকাছি চলে এসেছে। তার আগেই অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। দুই দিনের এই সরকারি সফরে অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভ্যান ডের ব্যালেনের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪