দিনাজপুর বার্তা২৪.কম :- ১১ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনে সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন প্রত্যাশী, দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ছাড়াও সাধারন মানুষের মাঝে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। কারা প্রার্থী হতে পারেন, কোন কোন দল অংশ নেবে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কোন প্রার্থীর এসবই এখন আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্ঠা করছে জাতীয় পার্টি সহ ছোট ছোট দলগুলোর মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন দিবস, ঈদ ও পূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে টানানো পোষ্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনের মাধ্যমে মূলত নেতারা নির্বাচনী প্রার্থী হওয়ার কথাই জানান দিচ্ছেন। এ কারণে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সবখানে চলছে নির্বাচনী নানা বিশ্লেষন। কে হচ্ছেন নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থী তা নিয়ে জমে উঠছে আড্ডা। দিনাজপুরের যে কয়টি আসন আছে তার মধ্যে দিনাজপুর-২ আসনকে ভিআইপি আসন হিসেবে দেখা হয়। কারন প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বড় দুই দলের বাঘা বাঘা কেন্দ্রীয় নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকেন। তবে বর্তমানে মাঠে সক্রিয় অবস্থানে অবস্থান করছেন এই আসনের পরপর দুই বারের নির্বাচিত এমপি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পর পর তিন বারের নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্র্বাচনে প্রথম নির্বাচন করতে এসেই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্র্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য লেঃ জেঃ মাহবুবুর রহমানকে বিপুল সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে চমক দেখান উদীয়মান তরুন নেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। এমপি হওয়ার পর দলীয় কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর- ২ (বিরল ও বোচাগঞ্জ) আসনটি পুর্বে উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়লেও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে পর পর দুই বার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুই উপজেলার উন্নয়নের চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। সড়ক যোগাযোগ, রেল যোগাযোগ, ব্রীজ কালভার্ট, বিদ্যুতায়ন, রাবার ড্রাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, মসজিদ- মন্দির নির্মান, গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন সহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে দুই উপজেলার মানুষের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষোম হয়েছেন। তার দৃঢ় নেতৃত্বের কারনেই বিরল ও বোচাগঞ্জে একের পর এক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে বিরল স্থল বন্দর চালু, সেতাবগঞ্জ-দিনাজপুর আধুনিক সড়ক নির্মান, কাঞ্চন মোড় হতে পাকুড়া সড়ক উন্নয়ন, রেল লাইন সম্প্রসারন করে নতুন রেল ষ্টেশন চালু, দুই উপজেলায় প্রায় শতভাগ শুভ বিদ্যূতায়ন সহ যে সকল উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা চোখে পড়ার মত । এছাড়াও ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উন্নয়ন, দুই উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়াম নির্মান। এলাকাবাসী এমপি খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে একজন স্বজ্জন এমপি হিসেবে মনে করেন। বিভিন্ন সুখ ও দুঃখে তিনি এলাকায় ছুটে আসেন এবং খোঁজ খবর নেন। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় বিরল ও বোচাগঞ্জ উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পরও এমপি খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলো আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে দুই উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীরা এমপির দিক নির্দেশনায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে করে আগামী ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এলাকার ভোটাররা কোন অজুহাত দাঁড় করাতে না পারেন। আগামী নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর মনোনয়ন পত্র নিশ্চিত বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তবে আওয়ামী লীগের আর অন্য কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভাবে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। কারন গত গত ৯ বছরে তিনি যেভাবে এলাকার উন্নয়ন সাধিত করে দলকে ঢেলে সাজিয়েছেন, দলের কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছেন সর্বপোরী সাধারন মানুষের মনে স্থান করে নিতে পেরেছেন তার জন্য দল সবদিক বিবেচনা করেই পুনরায় তাকেই চুড়ান্ত মনোনয়ন দিবেন বলে আশা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এদিকে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে না নিয়ে আশংকা থাকলেও বসে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য লেঃ জেঃ মাহবুবুর রহমান নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তরুন প্রার্থী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর থেকেই তিনি তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ ও দলের সাথে তেমন কোন যোগাযোগ রাখেন নি। ঢাকায় সময় বেশী সময় কাটানোর কারনে প্রায় জন বিছিন্ন হয়ে পড়েছেন তবে তার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় বেশ এগিয়ে গেছেন বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক। বিশেষ করে বিভিন্ন গ্রামে মসজিদ নির্মানে সহযোগিতা, অসহায় গরীব মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার খরচ চালানো সহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকলেও সরাসরি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন ৪/৫ বছর ধরে। ঢাকায় ব্যবসা করার সুবাদে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় আগামী নির্বাচনে তিনিও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশি। এদিকে দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক প্রভাষক মঞ্জুরুল ইসলামও দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৌড় ঝাপ করছেন। এদিকে মহাজোটে থাকার পরও জাতীয় পার্টি সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষনা দেওয়ার পর থেকেই বরাবরের মতই জাতীয় পাটির নেতা জীবন চৌধুরী ও বোচাগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এ্যাডভোকে জুলফিকার আলীও দলের মনোনয়ন পেতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলে জানা গেছে। এই আসনটি নৌকা মার্কার শক্ত ঘাঁটি হলেও ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কন্দোলের কারনে হাত ছাড়া হয়। তবে নবম সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রতিকে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই তিনি দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে লবিং, গ্রুপিং থাকলেও তেমন কোন দলীয় কোন্দল নেই। সংসদ সদস্যর নির্দেশ মেনেই বিরল ও বোচাগঞ্জের আওয়ামীলীগ বেশ ভালভাবেই দল গুছিয়েছে। এছাড়াও জাতীয় পাটির মনোনয়ন প্রত্যাশি জীবন চৌধুরী মাঠে না থাকলেও এ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী রাজনীতিতে সব সময় সক্রিয় থাকেন। বোচাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে তিনি পর পর দুই বার চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। জেলা শহরের অবস্থান করলেও প্রায় প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকায় ছুটে আসেন এবং সাধারন মানুষের খোঁজ খবর রাখেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪