দিনাজপুর বার্তা২৪.কম : দিনাজপুরে আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী ইজতেমা শেষ হয়েছে। আখেরী মুনাজাতে ছিল সর্বস্তরের মানুষের ঢল। মুনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের মুরব্বি ও বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) মাওলানা মো. রবিউল হক। ১২ থেকে ১২টা ১১ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ১১ মিনিটের মুনাজাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানদের শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা কামনা করা হয়।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দিনাজপুর বড়মাঠে ইজতেমা মাঠে সমবেত হন কয়েক লাখ মানুষ। বেলা ১০টার মধ্যে ইজতেমা মাঠ ভরে শিশু পার্ক, পুলিশ সুপার অফিসের রাস্তা ও আশপাশের এলাকা লোকে লোকারন্য হয়ে ঊঠে। দিনাজপুর বড়মাঠ পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
মুনাজাতে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষের দাবী দিনাজপুরে এতো বড় জমায়েত আর কখনো হয়নি। আখেরী মুনাজাতে ৫/৬ লাখ লোক অংশগ্রহণ করেছে বলে ইজতেমার আয়োজক ও সাধারণ মুসল্লিরা দাবী করেছে। শহরের অধিকাংশ দোকানীরা দোকানপাট বন্ধ করে মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। ফলে শহর ছিল ফাকা।
আখেরী মুনাজাতে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, পুলিশ সুপার মো. হামিদুল আলম, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া জেলা শহর ও আশপাশের এলাকার পুরুষ, নারী বৃদ্ধ, শিশুসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
ইজতেমার শেষ দিন শনিবার বাদ ফজর থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত বয়ান করেন কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা মো. মোশাররফ হোসেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত হেদায়েতী বয়ান পেশ করেন কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা আব্দুল মতিন। হেদায়েতী বক্তব্যের পর মুনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের মুরব্বি ও বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) মাওলানা মো. রবিউল হক। প্রায় ১১ মিনিট পর মুনাজাত শেষ করেন। মুনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করা হয়।
আখেরী মুনাজাতের পূর্বে ১৫ মিনিট বয়ান পেশ করেন মাওলানা মো. রবিউল হক। এ সময় তিনি বলেন, সাহাবায়ে কেরামের যুগে তাদের কোন সামান (সরঞ্জাম) ছিল না। তাদের জ্ঞানও কম ছিল। তার পরও তারা ইমানের বলে বলিয়ান হয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়েছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের মুসলমানদের হাতে সব কিছু থাকার পরও আজ বিশ্বে মুসলমানরা লাঞ্চিত। এর কারণ মুসলমানরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াতী কাজ থেকে দুরে সুরে গেছে। তাই মুসলমানদের সেই মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে হলে দ্বীন ইসলামের পথে ফিরে আসতে হবে। তাহলে বিশ্বে আবারো শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। বয়ান শেষে প্রায় ১১ মিনিট মুনাজাত করার পর মুনাজাত শেষ করেন মাওলানা মো. রবিউল হক।
এদিকে দিনাজপুর তাবলীগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) আলহাজ্ব মো. লতিফুর রহমান জানান, তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ইজতেমা মাঠ থেকে প্রায় ৫০টি জামাত এক চিল্লা ও তিন চিল্লার জন্য বের হয়ে যায়। এসব জামাত সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও বি.বাড়িয়া জেলায় যাবে বলে জানান তিনি।
এই তিনটি জেলায় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
অপরদিকে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ইজতেমা মাঠের চার পাশে মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ৬টি পুলিশ বক্স স্থাপন করা হয়। পাশাপাশি রয়েছে রাব-পুলিশের সার্বক্ষনিক টহলদল। এছাড়া সাদা পোষাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন ইজতেমা মাঠে দায়িত্ব পালন করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
মাজেদা মনজিল, মালদাহপট্টি
দিনাজপুর-৫২২০
মোবাঃ ০১৭১৪৯১০৭৭৯, ০১৭৭২৯৩৩৬৮৮
ই-মেইলঃ [email protected], [email protected]
দিনাজপুর বার্তা ২৪