দিনাজপুর বার্তা২৪.কম :- ইট পোড়ানোর মৌসুমে শুরু না হওয়া সত্বেও হঠাৎ করে কয়লার অস্বাভাবিক চাহিদা বৃদ্ধির রহস্যভেদ করতে না পারায় গত ১৯ জুলাই থেকে বড়পুকুরিয়ায় কয়লা বিক্রি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে খনি কর্তৃপক্ষ। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি (বিসিএমসিএল) পরবর্তী বোর্ড সভার অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত কয়লা বিক্রি স্থগিত থাকবে বলে এতথ্য জানান, খনির মহাব্যবস্থাপক ও কোম্পানির সচিব আবুল কাশেম প্রধানিয়া।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে খনির ১২০৭ নং কোল ফেজ প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার মেঃ টন কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। আগামী আগষ্ট মাসের মধ্যে এফেজের উত্তোলন যোগ্য কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে ১২১০ লোয়ার ফেজ থেকে কয়লা উত্তোলন করা হবে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক আবুল কাশেম প্রধানিয়া জানান, নতুন ফেজকে কয়লা উত্তোলনের উপযোগী করতে প্রায় ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগে। তবে এ ফেজের কিছু প্রকৃতি গত জটিলতা থাকায় নতুন করে কয়লা উত্তোলন শুরু করতে প্রায় ৩ মাস সময় লাগতে পারে। তিনি আরো জানান, বড়পুকুরিয়ার উত্তোলনকৃত কয়লার প্রধান ক্রেতা পিডিবি’র বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি চালু রাখতে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার মেঃ টন কয়লা প্রয়োজন। এছাড়াও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সবসময় আপদকালীন বাড়তি কিছু কয়লা মজুদ রাখতে হয়। এসব কারনে বর্তমান পরিস্থিতে আগামী ৩/৪ মাসের জন্য প্রায় ৩ লাখ টন কয়লার মজুদ রেখে অবশিষ্ট কয়লা বিক্রি করতে হবে।
কয়লা বিক্রি স্থগিতের বিষয়ে খনির উপ-মহাব্যবস্থাপক (সেলস এন্ড মাকের্টিং) খান মোঃ জাফর সাদিক বলেন, দেশের বিভিন্ন ইট ভাটা মালিক ও ব্যবসায়ীদের কাছে যথারীতি কয়লা বিক্রি অব্যাহত ছিল। গত ১৭ জুলাইয়ে ৩২ হাজার মেঃ টন কয়লা বিক্রি করা হয়। এ দিন ৪২টি প্রতিষ্ঠানের নিকট এসব কয়লা সরবরাহের আদেশ (ডিও) দেয়া হয়। পরদিন ১৮ জুলাই সকালে ৬টি প্রতিষ্ঠান কয়লার জন্য আবেদন করে। তাদের চাহিদা ছিল ৬ হাজার মেঃটন। পরবর্তী প্রায় আধা ঘন্টার মধ্যে আরো ১৮ হাজার মেঃ টন কয়লার জন্য আবেদন পড়ে। ১৮ জুলাই বিকেল ৫টার পর্যন্ত ২দিনে পড়ে প্রায় ৪০০ আবেদন জমা হয়। এসব আবেদনের চাহিদা পুরনের জন্য প্রয়োজন প্রায় সাড়ে তিন লাখ মেঃ টনের সমপরিমান কয়লা। হঠাৎ দু’দিনে এত বিপুল পরিমান কয়লার চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বাভাবিক ও রহস্যময় মনে হওয়ায় খনি কর্তৃপক্ষ সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের সঙ্গে পরামর্শ করে খনির কয়লা বিক্রির বিষয়টি খনির পরবর্তী বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষনা করা হয়। এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এলাকার কতিপয় সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি পরিবেশ ঘোলা করে এ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের সুযোগ খুজছেন বলে দাবী খনির উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের।