ঢাকাসোমবার , ১৬ এপ্রিল ২০১৮
  1. অন্যান্য
  2. অর্থ ও বাণিজ্য
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কাহারোল
  5. কুড়িগ্রাম
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খানসামা
  9. খেলা
  10. গাইবান্ধা
  11. ঘোড়াঘাট
  12. চাকরী বার্তা
  13. চিরিরবন্দর
  14. জাতীয়
  15. ঠাকুরগাঁও
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পঞ্চগড়ে সীমান্তে ভারত-বাংলার মানুষের মিলনমেলা

মোফাচ্ছিলুল মাজেদ
এপ্রিল ১৬, ২০১৮ ৫:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো: একরামুল মুন্না, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি: প্রতি বছরের মতো পঞ্চগড় সীমান্তে ভারত- বাংলার মানুষের মিলনমেলা আবেগে ভাসলো স্বজনরা। এবারো নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই বাংলার মিলন মেলা।শত কষ্ট আর কড়া নজরদারি বিজিবি, বিএসএফের বাঁধা উপেক্ষা করে প্রিয় স্বজনদের সাথে এক পলক দেখা করতে সীমান্তে লাখো মানুষের ঢল নামে। মুহুর্তে ওই সীমান্ত দুই বাংলার মিলন মেলায় পরিণিত হয়।

প্রতি বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন মিলন মেলা না হলেও পরের দিন জেলা সদরের অমরখানা সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে এই মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মিলন মেলায় অংশ নিতে সীমান্তে দুই পাড়ে জড়ো হতে থাকে লাখো মানুষ। এদিকে সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ঐতিহাসিক নাওঘাটায় সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠার দাবীতে মানববন্ধন করেছে ইউনিয়নবাসী।

দুই সীমান্তের কাঁটাতারের বাংলাদেশের ভারতের আতœীয় স্বজনদের সাথে কয়েক মূহুর্ত সময় কাটানো আর সুখ দু:খের খবর নেয়ার জন্য লাখো মানুষ ছুটে এসেছে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্তে। ১৫ এপ্রিল রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় এই মিলনের কথা থাকলেও ভোর বেলা হতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে থাকেন সাধারন মানুষ। কেউ কেউ আগের দিন এসে আতœীয় স্বজনের বাড়িতে অপেক্ষা করছেন। এই অপেক্ষার চোখ গুলোতে ভাসতে থাকে অনেকদিন আগে চলে যাওয়া নিজের আতœীয় স্নজনের মুখ। সকাল সাড়ে দশটায় এক পলক দেখা করার অনুমোতি মেলে তাদের। হুমরি খেয়ে পড়ে সবাই। আতœীয় স্বজনকে খুঁজতে থাকেন তারা।

এর আগে ঐতিহাসিক নাওঘাটা সীমান্তে সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠার দাবীতে মানববন্ধন করে অমরখানা ইউনিয়নবাসী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন নাওঘাটা সীমান্তে পাকিস্তান আমল থেকে মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই এলাকার লাখো মানুষের আতœীয় স্বজন ওপার বাংলায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে সাধারন মানুষ তাদের আতœৗয় স্বজনদের সাথে এক পলক দেখা করার জন্য এই মেলায় ছুটে আসেন। তাই এই সীমান্তে একটি সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠিত হলে দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সুসম্পর্ক স্থাপন হবে। মানববন্ধনে কয়েক’শ মানুষ অংশ নেয়
এদিকে মিলনমেলায় প্রিয় স্বজনদের সাথে এক পলক দেখা করতে সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে লাখো মানুষের ঢল নামে। মুহুর্তে ওই সীমান্ত দুই বাংলার মহা মিলন মেলায় পরিণিত হয়। স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা সাধারন মানুষের দাবি পঞ্চগড়ের সীমান্তে একটি সীমান্ত হাঁট স্থাপনের। ঠাকুরগাঁও থেকে উমেন চন্দ্র রায় (৮০) তার মেয়েকে দেখতে এসেছেন। তার মেয়ে প্রমিলার বিয়ে হয়েছে ভারতের শিলিগুড়িতে। উপেন জানান, আমরা গরিব মানুষ পাসপোর্ট ভিসা করে মেয়েকে দেখতে যেতে পারি না। তাই মেয়েকে দেখতে এসেছি। জানিনা আর দেখা পাবো কিনা। তবে এখানে একটি সীমান্ত হাট হলে আমাদের মতো দরিদ্র মানুষের অনেক উপকার হতো।

এসময় কাঁটা তারের বেড়ার ফাঁকা দিয়েই প্রিয় স্বজনদের এক পলক দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই। পুড়ো সীমান্তে এক আবেগ ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ স্বজনদের হাত ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ স্বজনদের জন্য আনা উপহার সামগ্রী বিনিময় করে। ওই সীমান্তের ৭৪৪ নং মেইন পিলারের ১ থেকে ৭ নং সাব-পিলার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার নো-ম্যান্সল্যান্ড এলাকার কাঁটাতারের বেড়ার দুই পাশে পঞ্চগড় জেলার অমরখানা ইউনিয়নের অমরখানা ও বোদাপাড়া এবং ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার রায়গঞ্জ থানার খালপাড়া, ভিমভিটা, গোমস্তাবাড়ি ও বড়ুয়াপাড়া গ্রামসহ উভয় দেশের বিভিন্ন বয়সী লাখো মানুষ মিলনমেলায় অংশ নেয়। এই মিলন মেলায় লাগেনা কোন ভিসা বা পাসপোর্ট। কাঁটা তারের বেড়ার ফাঁকা দিয়েই প্রিয় স্বজনদের এক পলক দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই।

আবেগ, কান্না,স্নেহ ভালোবাসায় ভরে উঠে পুড়ো সীমান্ত। এ সময় কেউ স্বজনদের হাত ছুঁয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন আবার অনেকে। স্বজনদের জন্য আনা উপহার সামগ্রী বিনিময় করে। এবার কেউ কেউ নববর্ষ উপলক্ষে ভারতীয় স্বজনদের ইলিশ মাছ উপহার দেয়। আত্মীয় স্বজন না থাকলেও মিলন মেলার মহোৎসব দেখতে আসে তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েরাও।

অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান( নুরু) জানান, প্রতি বছরই বাংলা বছরের প্রথম দিনে অমরখানা সীমান্তে দুই বাংলার যে মিলন মেলা হয়। এই মেলাতে সবাই ঈদের মতো আনন্দ করে। উপহার সামগ্রি স্বজনদের মধ্যে আদান প্রদান করে। প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকায় এটি সম্ভব হয়েছে। ঐতিহাসিক নাওঘাটায় একটি সীমান্ত হাট জরুরী। হাটটি স্থাপন হলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

বিজিবি সূত্র জানা যায় ৪৭’এ পাক-ভারত বিভক্তির পূর্বে পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া, বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে ছিল। পাক-ভারত বিভক্তির পর এসব এলাকা বাংলাদেশের অর্ন্তভূক্ত হয়। দেশ বিভক্তের কারণে উভয় দেশের নাগরিকদের আত্মীয়-স্বজন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও দুই দেশের নাগরিকরা তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাওয়া-আসার সুযোগ পেলেও ভারত সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মান করায় অবাধ যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে উভয় দেশের নাগরিকদের অনুরোধে প্রায় কয়েকযুগ ধরে বিজিবি ও বিএসএফের সহযোগিতায় অমরখানা সীমান্তের নাওঘাটা এলাকায় দুই বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এছাড়া মাগুড়মারি,ভূতিপকুর ও শুকানী সীমান্তেও এই মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, কয়েক যুগ ধরে এই মিলন মেলা হয়ে আসছে। আমরা জেনেছি এই এলাকার মানুষ নাওঘাটায় একটি সীমান্ত হাট দাবি করেছে। তাদের দাবি যৌক্তিকতা বিবেচনা করে আমরা উপরের কথা বলবো এবং দ্রুত একটি সীমান্ত হাট স্থাপনের চেষ্টা চালাবো।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।