ষ্টাফ রিপোর্টার : জমকালো অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে শেষ হলো দিনাজপু শিল্প চর্চার নান্দনিক প্রতিষ্ঠান ড্রইং স্কুল এর বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সনদ,পদক, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পরিচালক নাজমুস সাকেব রানা। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রওনাকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি দিনাজপুরের ভেটেরিনারি অফিসার ও ড্রইং স্কুলের নির্বাহি সদস্য ডা. আমিনা আকবর তৃষা এবং কেবিএম কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল সরদার কুদরত এ খুদা ডন। স্কুলের সামগ্রিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন ড্রইং স্কুল দিনাজপুর এর সাধারন সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জুর।
প্রধান অতিথি মো. রওনাকুল ইসলাম ড্রইং স্কুল দিনাজপুরকে একজন মেধাবী মানুষের সৃষ্টি চর্চার ফসল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা নাজমুস সাকেব রানা আগে এনজিওতে চাকুরি করতেন। কুড়িগ্রামে কর্মরত থাকাকালে সেখানে তাঁর নিখুঁত ও সৃষ্টিশীল কর্ম দেখেছি। প্রশাসনের সবাই তাঁকে চিনতেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সৃজনশীল যে কোন কাজের দায়িত্ব তাঁকেই দেয়া হতো। তিনি নিখুঁতভাবে সে দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর কাজের সৃজনশীলতার কারণে তখন আমার মনে হতো যে, চাকুরি না করে সৃজনশীল কিছু করলে সেটা হতো তাঁর জন্য মানানসই। পরে সত্যি সত্যিই তিনি চাকুরি বাদ দিয়ে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং স্কুলটি দিনাজপুরের স্বনামধন্য অংকন স্কুল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আমি বিশ^াস করি যে, এই স্কুল শিল্প চর্চায় উত্তরবঙ্গের একটি শ্রেষ্ঠ স্কুলে পরিণত হবে। কারন এই স্কুল যিনি পরিচালনা করচেন, তিনি শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল মানুষগুলোর মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভেটেরিনারি অফিসার ডা. আমিনা আকবর তৃষা বলেন, ড্রইং স্কুল দিনাজপুর গত ১১ বছরে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে এবং চমৎকার সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই স্কুল শিক্ষার্থীদের গর্বের প্রতিষ্ঠান। এটি আরো ভালভাবে যেন এগিয়ে যেতে পারে, সেজন্য সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আরেকজন বিশেষ অতিথি কেবিএম কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল সরদার কুদরত এ কুদা ডন বলেন, ড্রইং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং আমি একসাথে লেখাপড়া করেছি। স্কুলে পড়ার সময় তাঁর হাতে চমৎকার সব ছবি আঁকা দেখেছি। তিনি ক্লাসে বসেই ছবি আঁকতেন। তাঁর ছবি আঁকার বিষয়টি অন্তর থেকে থেকে কাজ করেছে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। সহজাত মননশীলতার কারণেই তিনি অংকন স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন এবং সফলভাবে স্কুলটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচেছন। অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের পক্ষ হতে খায়রুল ইসলাম চৌধুরী ও ডা. ইমরান পারভেজ বক্তব্য রাখেন। খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ড্রইং স্কুলে আমার মেয়েকে ভর্তি করিয়েছি এর পরিবেশগত চমৎকারিত্ব দেখে। ডা. ইমরান পারভেজ বলেন, এই স্কুলের মেমরা বাচ্চাদের প্রতি যতœশীল। আমার মেয়ে একদিন অসুস্থ্য হয়ে বমি করেছিল। স্কুলের মেম তার বমি পরিস্কার করে দিয়ে, সুস্থ্য করে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিল। বাচ্চাদের প্রতি তাদের এই মাতৃসুলভ মনোভাবে একজন অভিভাবক হিসেবে আমাকে আশ^স্ত করে এই ভেবে যে, আমার বাচ্চা এখানে নিরাপদ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী রোখসেনা পারভীন, শিক্ষকদের পক্ষে সুমাইয়া মানতাসা ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঋতিকা আখতার। পরে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ ও পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের প্রতি আন্তরিকতা, ভালবাসা, ত্যাগ ও শ্রমের কারণে সুবর্ণা আখতার, সামিহা শারমীন ও মায়মুনা আখতার মেঘাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং বাচ্চাাদের শিল্প চর্চায় আগ্রহী দম্পতি হিসেবে ইতি ইব্রাহিম ও ফৌজিয়া বেগম পান্না, রিংকি বসাক ও অর্ণব কুমার বসাক, কামরুননাহার ও খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, উলফাতজাহান ও ডা. ইমরান পারভেজ, আমিনা খাতুন ও আব্দুল কাদেও দম্পতিকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়। এসময় ড্রইং স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সদস্য মামুন হাসান চৌধুরী, ড. টিটো রেদওয়ান, মোস্তাফিজুর রহমান রুপম, আফরোজা পারভীন ঝুমা প্রমুখ উপস্থিত ছিরেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন অভিনয় শিল্পী হারুনুর রশিদ। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।