ষ্টাফ রিপোটার \ মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী কৃর্তক বাংলার পল্লী গ্রামে পাক সেনাদের হাতে সম্ভ্রম হারা গৃহবধুরা তাদের আত্মকথা অনেকে বলেছেন আবার অনেকে লোক লজ্জার ভারে বলতে নারাজ। এ ভাবে অনেকে সত্য ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৭১ এর সম্ভ্রম হারা নারীদের নিকট থেকে তাদের ভিতরের হাঁঃহাঁঃকারের চিত্র ফুটে উঠে। কয়েকজন নারী তাদের স্বিকার উক্তি মূলক বক্তব্য সংবাদ কর্মিদের কাছে তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে একজন প্রমিলা দাশ পিতা সুকেশ চন্দ্র দাস বাড়ী নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামাড় পুকুর গ্রামে স্বাধীনতা যুদ্ধের এক বছর পূর্বে প্রমিলার বিয়ে হয়। তার বয়স ছিল ষোল বছর। বিয়ে হয় দিনাজপুর সদর উপজেলার ২নং সুন্দরবন ইউনিয়নের দাশ পাড়ায়। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে প্রমিলার পিতা মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। যুদ্ধকালীন সময় প্রমিলার পিতা সুকেশ মুক্তিযোদ্ধার সোর্সের কাজ করত মুক্তিযোদ্ধের খবরাখবর আদান প্রদান করত। এ খবর এলাকায় পাকসেনাদের নজরে পড়ে। এর কয়েক দিনের মধ্যে বিগত ০৬/১২/১৯৭১ ইং বিকাল ৫টা সময় সুকেশকে বাড়ি থেকে সাহেব ডেকেছে বলে তাকে নিয়ে যায় পার্শ্ববতী বাড়িতে। আধা ঘন্টা পর তাকে চিকলি ব্রীজ পর্যন্ত আগিয়ে দেয় এবং পিছন দিক থেকে পাক সেনারা তাকে গুলি করে হত্যা করে। পিতার রক্তের দাগ না শুকাতে পরদিন নিহত কিশোরী কন্যার খোজে বাড়িতে আসে। এসময় বাড়ি ও প্রতিবেশির লোকজন পালাতে থাকে। প্রমিলা সহ তিনজন কিশোরী একসঙ্গে নদীর ধার দিয়ে দৌড়াতে থাকে। দুই জন নদীতে ঝাঁপ দিলেও প্রমিলাকে ধরে ফেলে। পাশবিক অত্যাচারের এক পর্যায়ে জ্ঞান হারালে তাকে মৃত বলে পায়ের লাথি মেরে চলে যায়। পিতার মৃত্যু বোনের পাশবিকতার দৃশ্য দেখে তার বড় ভাই চন্দন দাশ বুক ঢুকরিয়ে কাঁদতে গিয়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে। সে সব কিছু হারিয়ে আজ ভিক্ষুকের জীবন যাপন করছেন। প্রমিলা দাশকে তার স্বামী পরিত্যাগ করে। সে অতি কষ্টে অপরের বাড়িতে মুজরী দিয়ে জীবন যাপন করছেন। এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করতেগিয়ে ঘটনার অনেক সত্যতা মিলছে। সৈয়দপুর উপজেলার সাবেক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইউনূস আলী উক্ত ঘটনা তুলে ধরে তার বর্ণনা দেন। এ ব্যাপারে তারা সৈয়দপুর বীরমুক্তিযোদ্ধা কমান্ড থেকে ভারতীয় তালিকা ভূক্ত তাদের তালিকা ও গেজেট নাম্বার তুলে ধরে প্রমিলা দাশের জন্য সুপারিশ করেছেন। গত ২৫/০৭/২০২১ ইং ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার রায়ের কাছে বীরঙ্গনা ও বীরমুক্তিযোদ্ধার জন্য সুপারিশ গ্রহন করেন। সে আজ বীরঙ্গনা ও বীরমুক্তিযোদ্ধার স্বিকৃতি চায়।