স্টাফ রিপোর্টার ॥ দিনাজপুরে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ১৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্তÍ ৯৫৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর গত ২৪ ঘন্টায় নতুন আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত জেলায় ১৮৩ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ১০৭ জনসহ এ পর্যন্ত ৬৬৩৪ জন সুস্থ হয়েছেন। তবে আক্রান্ত ৯৫৩৭ জনের মধ্যে ৬৬৩৪ জন সুস্থ ও ১৮৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে দিনাজপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগির সংখ্যা রয়েছে ২৭২০ জন। যা আগের দিন ছিল ২৬৪৬ জন।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ জানান, মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ৫২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৩ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগির সংখ্যা পৌঁছেছে ৯৫৩৭ জনে। নতুন আক্রান্ত ১৮৩ জনের মধ্যে সদর উপজেলাতে ১০৮ জন। এছাড়া বিরলে ১২ জন, বীরগঞ্জে ৬ জন, বোচাগঞ্জে ১৬ জন, চিরিরবন্দরে দুইজন, ফুলবাড়ীতে ৮ জন, ঘোড়াঘাটে একজন, হাকিমপুরে একজন, কাহারোলে ৩ জন, খানসামায় ৭ জন, নবাবগঞ্জে একজন ও পার্বতীপুর উপজেলায় ১৮ জন। মঙ্গলবার পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ছিল ৩৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ৩১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘন্টায় নতুন আরো ১০৭ জনসহ এ পর্যন্ত ৬৬৩৪ জন সুস্থ হয়েছেন। আর ২৪ ঘন্টায় সদর উপজেলায় একজন ও বিরামপুর উপজেলায় একজনসহ জেলায় এ পর্যন্ত ১৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দিনাজপুরে মোট আক্রান্ত ৯৫৩৭ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশী ৫৫৪৪ জন। এছাড়া বিরলে ৫৪৪, বিরামপুরে ৫৩৩ জন, বীরগঞ্জে ২৪৪ জন, বোচাগঞ্জে ৩২৯ জন, চিরিরবন্দরে ৩২০ জন, ফুলবাড়ীতে ৩৯৬ জন, ঘোড়াঘাটে ৯৯ জন, হাকিমপুরে ২৩৭ জন, কাহারোলে ২১৮ জন, খানসামায় ১৫৪ জন, নবাবগঞ্জে ২৬০ ও পার্বতীপুর উপজেলায় ৬৫৯ জন।
মোট মৃত ১৮৩ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ৯৭, বিরলে ১০ জন, বিরামপুরে ১১ জন, বীরগঞ্জে ৬ জন, বোচাগঞ্জে ৬ জন, চিরিরবন্দরে ১৩ জন, ফুলবাড়ীতে ১০ জন, হাকিমপুরে ৩ জন, কাহারোলে ৬ জন, খানসামায় ৫ জন, নবাবগঞ্জে ৪ জন ও পার্বতীপুর উপজেলায় ১২ জন। তবে জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ঘোড়াঘাট উপজেলায় এখন পর্যন্ত কারো মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৬৩৩টিসহ এ পর্যন্ত ৫৩৮৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৫২০টসহ (আরটি পিসিআর-১১৮টি, রেট-৪০২টি) এ পর্যন্ত ৫০৯৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ৫৫৬ জনসহ ৪৪৪৩৬ জন কোয়ারেন্টাইন নেয়া হয়েছে এবং ১৪০ জনসহ ৩৬৬৯০ জন কোয়ারেন্টাইন হতে ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ২৬০৩ জন। আর বর্তমানের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২০১ জন। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৩৫ জন, দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ২৪ জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সমূহে রয়েছে ৪২ জন। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনার উপসর্গযুক্ত আক্রান্ত ১১৭ জন ও সন্দেহভাজন ৮৪ জন।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ আরো জানান, দিনাজপুর জেলায় বর্তমানে মজুতকৃত অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২৮৫টি, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা’র সংখ্যা ১৯টি ও অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সংখ্যা ২৮টি।
এদিকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ মাঠে তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সারা দেশের ন্যায় দিনাজপুরে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। ৭ জুলাই বুধবার রাত ১২টায় এই লকডাউন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় লকডাউন আরো ৭ দিন বৃদ্ধি করায় এই লকডাউন হবে আগামী ১৪ জুলাই বুধবার রাত ১২টায়। এই লকডাউন চলাকালিন সময়ে জরুরী পরিসেবা ছাড়া সকল সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারী অফিসসমূহ, সকল ধরনের গনপরিবহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টায় থেকে বিকেল ৫টায পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে।