দিনাজপুর বার্তা২৪ ডেক্স: রাজশাহীর বাঘা মাজার শরীফের কবরস্থানে প্রবেশের গ্রীলে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। মাজার শরিফের কবরের উপর দানকৃত টাকা আতœসাতের অভিযোগে গতকাল শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিদুল ইসলাম এই তালা ঝুলায়ে দিয়েছেন।
জানা যায়, মাজার শরিফের আটটি দান বাক্রের টাকা সঠিক হিসাব দিতে না পারায় প্রায় নয় মাস আগে নতুন তালা ঝুলানো হয়। আবারও একই অভিযোগে গ্রীলে তালা ঝুলালো হয়েছে। উপজেলা সদরে হযরত শাহ্দৌলার মাজারে আটটি দান বাক্স রয়েছে। এই মাজার ঘুরতে ও মানত করতে আসা শত শত মানুষ এই বাক্সে টাকা জমা রাখেন। এই জমাকৃত টাকা মাজারের সাথে সম্পৃক্ত এক শ্রেণীর অসাধু কর্মচারিরা রাতের আধারে দান বাক্সের নকল চাবি দিয়ে হাতিয়ে নেয় মর্মে অভিযোগ হয়। ওই সময় অভিযোগ তদন্তের সত্যতা সাপেক্ষে আটটি দান বাক্সে নতুন তালা ঝলিয়ে দিয়ে চাবি সংরক্ষণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে দান বাক্্েরর বাইরে মাজারের ভেতর দরগা শরিফের কবরস্থান উম্মুক্ত ছিল। এই স্থানে দেখতে ও মানত করতে আসা মানুষ প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা কবরের উপর রাখত। এই টাকাও মাজারের দায়িত্বরত ব্যাক্তিরা সঠিক হিসাব না দিয়ে আতœসাত করত মর্মে অভিযোগ হয়। ফলে নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত সাপেক্ষে কবরস্থানে প্রবেশের গ্রীল তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
দরগা শরিফের পাশের স্থানীয় হিরাউল হক ও মুনসাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজার শরিফকে এখনো দুরর্নীতি মুক্ত করেতে পারেনি। দান বাক্রে নতুন তালা ঝুলালেও প্রতি শুক্রবার দরগা শরিফের ভেতরে যে টাকা ও মুরগী আসে তার কোন হিসাবে নেই।
দরগা শরিফের মতোয়াল্লী খন্দকার মনসুরুল ইসলাম রইসের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে দরগা শরিফের খাদেম বাচ্চু মিয়া বলেন, দরগা শরিফের ভেতরের অংশের জমাকৃত টাকা দিয়ে মাজার পরিস্কার করাসহ ১৩০ টি আম গাছের পরিচর্যা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন, দান বাক্সের চাবি বিধিমোতাবেক সরকারি কোষাগারে থাকার নিয়ম থাকলেও ব্যাতিক্রম ছিল। এই কারনে গত বছরের মে মাসে নতুন তালা ঝুলানো হয়। এছাড়া দরগা শরিফের ভেতরে কবরের উপর দেখতে ও মানত করতে আসা মানুষ টাকা রাখতেন। এই টাকার সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছেনা মর্মে একাধিক আভিযোগ পাওয়া যায়। তবে তদন্ত সাপেক্ষে এর সত্যতা পাওয়ায় এখানে নতুন তালা ঝুলানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত বাঘার ঐতিহাসিক হযরত শাহদৌলার মাজার, ৫০০ বছরের ঐতিহ্যপূর্ণ শাহী মসজিদ এবং সু-বিশাল দিঘীসহ জাদুঘরকে কেন্দ্র করে এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী আসেন। এদের মধ্যে অনেকেই মাজারের দান বাক্্ের নগদ অর্থ জমা দেন। আবার অনেকেই গরু-ছাগল-মুরগী মানত এনে রান্না করে খাবার বিলিয়ে দেন।