দিনাজপুর বার্তা ২৪.কম ডেস্ক ॥ সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হলেও এতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদই জিতবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার সিরিয়াজুড়ে ভোট কেন্দ্রগুলো খোলার পর দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগে কয়েকশ শিক্ষার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সিরিয়ার সরকার বলছে, এক দশক ধরে চলা যুদ্ধ সত্ত্বেও সিরিয়া যে স্বাভাবিকভাবে চলছে এই নির্বাচন তা তুলে ধরেছে। দেশটির বিরোধীদলগুলো ও পশ্চিমা দেশগুলো এই নির্বাচনকে আসাদের ক্ষমতা সংহত করার উছিলা হিসেবে দেখছে। এ নির্বাচনে আসাদের বিরুদ্ধে দুই জন অখ্যাত প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট দিতে আসা নার্সিং শিক্ষার্থী আমল বলেন, “আমরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে নির্বাচিত করতে এসেছি, তাকে ছাড়া সিরিয়া আর সিরিয়া থাকবে না।” ভোট কেন্দ্রগুলো খোলার আগে একদল শিক্ষার্থী শ্লোগান দিয়ে বলছিলেন, “আমাদের জীবন আপনার জন্য উৎসর্গ করেছি বাশার।” দেশটির কর্মকর্তারা গোপনে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিন যেন অনেক ভোটার ভোট দিতে আসে তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষগুলো শেষ কয়েকদিন দেশজুড়ে বড় বড় সমাবেশের আয়োজন করেছে। দেশটির প্রভাবশালী নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরও ভোট দিতে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। নিজেকে শুধু জাফর বলে পরিচিয় দেওয়া লাতাকিয়ার এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে, না গেলে এর দায়িত্ব বহন করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।” অন্য যে দুই জন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন সাবেক উপমন্ত্রী আবদাল্লাহ সালৌম আবদাল্লাহ ও সরকারিভাবে অননুমোদিত ক্ষুদ্র একটি বিরোধীদলের প্রধান মাহামুদ আহমেদ মারেই। বাবা হাফেজ আল আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতা গ্রহণ করেন বাশার আল আসাদ। তার আগে হাফেজ আসাদ ৩০ বছর ধরে সিরিয়া শাসন করেন। ২০১১ সালে আসাদের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পর পরে তা সিরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ব্যাপক যুদ্ধের রূপ নেয়। এক দশক ধরে চলা এ যুদ্ধে কয়েক লাখে লোকের মৃত্যু হয় ও এক কোটি ১০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হন, যা দেশটির জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদবিরোধী প্রতিবাদ প্রথম যেখানে দেখা গিয়েছিল দক্ষিণাঞ্চলের সেই দেরা শহরের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনের প্রতিবাদে এ দিন সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বাশার আল আসাদের সমালোচনা করে নির্বাচনটি ‘অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন।