চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ সকল সমালোচনাকে জয় করে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বেলতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও চিরিরবন্দর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাই সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসায় এলাকায় জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় গ্রামের মেয়েদের বাই সাইকেল চালানোর দৃশ্য জন্ম দিত সমালোচনার, চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে শুরু হতো আলোচনা। গ্রামের সেইসব আলোচনা সমালোচনাকে জয় করে মেয়েরা এখন স্কুল,কলেজ, হাট-বাজার, অফিস, আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেসহ বিভিন্ন জায়গায় বাই সাইকেলে যাতায়াত করছে। দিনদিন বাড়ছে তাদের সংখ্যা। একসময় অভিভাবকগণ যাতায়াতের অসুবিধার কথা ভেবে দুরের ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ভর্তি করতে চাইতনা, এখন সে ধারণা পাল্টেছে। মেয়েরাও সকল প্রতিকুল পরিবেশ মোকাবেলা করে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। লুৎফর রহমান শাহ নামের এক অভিভাবক জানান, দুরের রাস্তা হওয়া সত্ত্বেও ভাল মানের স্কুল হওয়ায় বেলতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মেয়েকে ভর্তি করেছি। মেয়েটি প্রতিদিন বাই সাইকেলে যাতায়াত করে। মোস্তারিনা, মেহেরুণ নামের দুই ছাত্রী জানায়, আমরা ৬ কিলোমিটার দুর থেকে বেলতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যাতায়াত করি। প্রচুর বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশায় শুধু সমস্যা হয়। এমনিতে স্কুলের পোশাক থাকায় রাস্তাঘাটে কোন সমস্যা হয়না। প্রধান শিক্ষক স্যার প্রায়ই রাস্তায় মোটর সাইকেলে টহল দেন। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থী প্রায় প্রতিদিন বাই সাইকেলে যাতায়াত করছে। চিরিরবন্দর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী রিমি আকতার ও অনন্যা আফরিন নামে ১০ম শ্রেণির দুই ছাত্রী জানায়,নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ও পিতামাতার আশা-আকাংখা পুরণে আমরা ৮ কিলোমিটার দুর রাজাপুর গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে গত ৫ বছর যাবৎ বাই সাইকেলে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছি। তারা আরও জানায়, পথিমধ্যে প্রতিনিয়ত বখাটে ছেলেরা আমাদের সাইকেলের পিছু নেয়ায় ও বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি করায় আমরা আতংকিত হয়ে পড়ি। একই অভিযোগ করেন প্রায় প্রতিটি মেয়ে শিক্ষার্থী। চিরিরবন্দর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন সরকার জানান, ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের ওই সময়টাতে পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা টহল জোরদার করলে বখাটেদের উপদ্রব কমে যেতে পারে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গোলাম রব্বানী জানান, ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি বন্ধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি আরও জানান, ১৮ মে পর মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ব্যপারে নির্দেশনা না থাকায় কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। সরকারী নির্দেশনা পেলে আমরা তাৎক্ষনিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।