দিনাজপুর বার্তা ২৪.কম ডেস্ক ॥ ঢাকা বোট ক্লাবে বর্তমান সময়ের আলোচিত নায়িকা পরীমনি ও তার সঙ্গীরা সেদিন রাতে কী করছিলেন তার একটি নতুন ভিডিও গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। এর আগে গ্রেপ্তার নাসির ইউ মাহমুদ পুলিশের সামনে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার সঙ্গে ভিডিওটির মিল রয়েছে। ১০ সেকেন্ডের নতুন ভাইরাল ওই ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে, পরীমনি বোট ক্লাবে ঢুকেই বারের সামনে চেয়ারে বসে তার সঙ্গে থাকা অমি ও জিমিকে নিয়ে মদ পান করছেন। এ সময় দূর থেকে বোট ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নাসির ইউ মাহমুদ তাকে মদ পান করতে নিষেধ করছেন। পরীমনিকে উদ্দেশ করে নাসির বলেন, ‘হোয়াট ইজ দিস, প্লিজ স্টপ ইজ, ডোন্ট ডু দিস, ইটস টু মাচ।’ নাসিরের উত্তরে পরীমনি বলেন, ‘অ্যাই যা…যা! বেরিয়ে যা!’
এসময় পরীমনি একটি বোতল নিতে চাইলে নাসির বলেন, আপনি কোনো বিদেশি মদ নিতে পারবেন না। ভিডিটিতে পরীমনির কণ্ঠস্বরও শোনা গেছে। মদপানে বাধা পেয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন পরীমনি। তিনি ধমক দিচ্ছিলেন। এরপর ক্ষুব্ধ পরীমনি ক্লাবে ভাঙচুর চালান। গ্লাস, প্লেট ভাঙেন এবং নাসির ইউ মাহমুদের দিকে বোতল ছুড়ে মারেন। এরই মধ্যে ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে বোট ক্লাবের সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ফুটেজ প্রকাশ পায়। ওই ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জুন রাত ১২টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ায়। সেই গাড়ি থেকে পরীমনি, জিমি ও অমিকে নামতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেকে বের হন বনিও। ক্লাবের রিসিপশনেও অমির সঙ্গে পরীমনিসহ অন্যান্যের ঢুকতে দেখা গেছে ওই ফুটেজে। এর আগে ১৩ জুন রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন পরীমনি। স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য চান তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে মা ডেকে তার কাছে সঠিক বিচার ও মেয়ে হিসেবে আশ্রয় চান। এদিনে রাতেই সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘৯ জুন রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাসির উদ্দিন মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। ওই সময় নাসির নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাসির আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে করে সামনের দাঁতে আঘাত পাই। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন।’ এর পরদিন ১৪ জুন সাভার থানায় নাসিরকে এক নম্বর এবং দেশের অন্যতম মানবপাচারকারী অমিকে দুই নম্বর আসামি করে মামলা করেন অভিনেত্রী। মামলার পরপরই রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে বিপুল পরিমান মাদকসহ গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
নাসির যা বলেছিলেন
বোট ক্লাবের সাবেক সভাপতি গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সাংবাদিকদের কাছে সেই রাতের ভিন্ন একটি বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাউন্টারে খুব দামি ড্রিঙ্কস ছিল, দামি বড় বড় ড্রিঙ্কস ছিল সেটা তারা (পরীমনি ও তার সঙ্গীরা) জোর করে নেয়ার চেষ্টা করেছিল।’ তিনি বলেন, ‘তারা তো নিতে পারে নাই, তারা তো ক্লাবের মেম্বার না। আমি জাস্ট তাদেরকে বাধা দিছি যে নেয়া যাবে না। নিতে হলে তোমাদেরৃ দিতে হবে এটা বিক্রিযোগ্য না। বাই দিস টাইম আমাদের বার ক্লোসড। এটা দেয়া যাবে না। ‘এর পরই সে (পরীমনি) উত্তেজিত হয়ে যায়। উত্তেজিত হয়ে একটার পর গ্লাস প্লেটৃ সে আমাকে গালিগালাজ শুরু করে। আমাদের স্টাফরা তাকে থামানোর চেষ্টা করে।’ নাসির উদ্দিনের দাবি, তিনি পরীমনিকে আগে থেকে চিনতেন না। আর ঘটনার সময় তিনি তাকে থামাতে চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি মারধরের শিকার হন। তিনি বলেন, ‘তার (পরীমনির) সঙ্গে যে একটা ছেলে ছিল সে আমাকে চড়-থাপ্পড় দেয় ও গ্লাস ছুড়ে মারে। সেটি আমার গায়ে লাগে। এই অবস্থায় আমাদের সিকিউরিটিদের আমি নির্দেশ দেই, তখন সিকিউরিটিরা তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। যখন সিকিউরিটিরা নিয়ে যায় বাই দিস টাইম সে অনেক ড্রিঙ্ক করে ফেলেছে এবং এটা আমাদের সিসি ক্যামেরায় দেখবেন যে, সে ড্রিঙ্ক করা অবস্থায় গাড়িতে উঠতে পারছে।’