ডাঃ মোঃ মশিউর রহমান ।। বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ অত্যান্ত জনবহুল একটি দেশ।করোনা Pandemic এ সারা বিশ্বের সাথে বাংলাদেশও বিপর্যস্থ। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত দেশগুলোর অন্যতম আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি। করোনা শুরুর প্রথম দোিকে শিশু আক্রান্তের সংখ্যা খুব নগন্য হলেও এখন ক্রমাগত বাড়ছে এই সংখ্যা। গত ২মাসে আমি যত শিশু করোনা রোগীর চিকিৎসা দিয়েছি, বিগত একবছরের চেয়ে তা অনেক বেশী এবং সংকটাপন্ন। প্রতিদিন কোন না কোন করোনা আক্রান্ত রোগী দেখছি এবং অনেক জনের মা বাবা ফোনে যোগাযোগ রাখছে।মা বাবা রা কত অসহায়। এই আক্রান্ত শিশুদের অনেকেই পরিবারের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে Positive হচ্ছে।এটাও আমার অভিজ্ঞতায় দেখছি পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্যরাও কোন না কোন ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী। বর্তমানে ইন্ডিয়ান করোনা ভেরিয়েন্ট খুবই বিপজ্জনক ও Super spreader.এই ভাইরাসের শ্বাসতন্ত্রের আক্রমণের ক্ষমতা অত্যাধিক।এটা যেহেতু বায়ু বাহিত রোগ কাজেই পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে ঘরের বাতাসেও আছে এই ভাইরাস। কাজেই একই পরিবারে অন্য ঘরে বা Distance maintain করলেও ছড়াতেই পারে কাজেই Mask পরার বিকল্প নাই। শিশুদের কখনো উপসর্গ দেখা যায় কখনো দেখা যায় না।এই যুদ্ধে ঢাল হচ্ছে Mask.মা বাবা অথবা পরিবারের অন্য সদস্যদের কাজে কর্মে বাড়ীর বাহিরে যেতে হয় কাজের প্রয়োজন বিভিন্ন জনের সাথে দেখা সাক্ষাত হয়।তাই বাড়ীর ২বছরের উপরে সবাই কে Mask পরতে হবে। নিশ্চয়ই এই সংকটময় অবস্থা অচিরেই কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ, তখন আবার পুর্বের মতই চলতে পারবেন। বাচ্চাদের সহ সবার জামা কাপড় খেলনা আসবাবপত্র Sanitize করতে হবে। ২বছরের বড় বাচ্চারা যখন খেলতে যাবে অবশ্য ই মাস্ক পরে যাবে, পাশাপাশি অন্য কেউ আক্রান্ত কিনা সেটা খেয়াল রাখবেন।অন্য কোন বাচ্চা আক্রান্ত হলেও উপসর্গহীন থাকতেই পারে কাজে বাড়িতে খেলার ব্যবস্তা করুন।মা বাবা সহ বাড়ির সবাই কে দ্রুত টিকা নিতে হবে। টিকা নিলে আক্রান্তের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এই রোগ এ মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই। টিকা নেয়ার পরও মাস্ক পরতে হবে।আগামী পৃথিবীতে নিশ্চয়ই আমরা আবার প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে অচিরেই ইনশাআল্লাহ। ছোট বড় সবার উপসর্গ প্রায় একই।প্রচন্ড জ্বর কাশি কাপুনী,শ্বাসকষ্ট গন্ধ না পাওয়া,গলা ব্যাথা,শরীর ব্যাথা,অবসাদ,মুখে স্বাদ না পাওয়া ইত্যাদি। বাড়ির কারো উপসর্গ দেখা দিলে কোয়ারিন্টন থাকবেন। করোনা টেষ্ট করবেন এবং অক্সিজেন সেচুরেশন দেখবেন ৪ঘন্টা পরপর।শিশুর অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৪নীচে আসলে,শ্বাসকষ্ট হলে তীব্র জ্বর হলে শিশু বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করাবেন। বাচ্চাদের Breastfeeding ও তরল জাতীয় খাবার বেশী খাওয়াবেন এবং Balance diet দেবেন।রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এই খাবার গুলো গুরুত্বপূর্ণ। জ্বর হলে Fast/Reset/Renova Drop Syrup Suppository দেবেন বয়স ও ওজন অনুপাতে। শিশুর টিকা USA তে ১২বছরের উর্ধ্বে সব বাচ্চাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। Pfizer শিশুদের টিকা নিয়ে গবেষণা করছে হয়তো অচিরেই আবিষ্কার হবে।মা আক্রান্ত হলে শিশুকে বাবার কাছে, বাবা আক্রান্ত হলে মায়ের কাছে অথবা বাবা মা দুই জনে আক্রান্ত হলে শিশুকে পরিবারের অন্য কারো কাছে রাখুন।অবশ্যই বয়স্কদের কাছে শিশুকে রাখবেন না তাহলে তাদেরকে ঝুঁকিতে ফেলে দেয়া হবে।অন্য কারো কাছে রাখা সম্ভব না হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজের কাছে রাখুন। ৬ফিট দুরত্বে আলাদা খাট বা দোলনায় রাখুন। লক্ষন প্রকাশ হওয়ার ২-১৪দিন আগেই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে, কাজে মা বাবার লক্ষন প্রকাশ হওয়ায় আগেই বাচ্চারা সংক্রামিত হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে লক্ষন থাকুক আর থাকুক তারাও বড়দের মত সমান হারে ভাইরাস ছরায়।মা বাবা অথবা পরিবারের অন্য সদস্যদের কউ আক্রান্ত হলে বাচ্চাদের পরীক্ষা করা উচিত তহলে পরবর্তী তে চিকিৎসা করাতে সুবিধা হবে। মা Positive হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়াবেন,খাওয়ানো হলে অন্যদের কাছে বাচ্চাকে রাখুন।মাস্ক পরুন,হাঁচিকাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন, সাবান পানি দিয়ে বার-বার হাত ধুবেন।যে কোন সমস্যা হলে শিশু বিশেষজ্ঞ দেখান। জ্বর মানেই করোনা নয়,ফ্লু টাইফয়েড ইত্যাদি হতে পারে,সেক্ষেত্রে শিশু বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিন। জ্বর হলে অবহেলাও নয়।কোন তথ্য গোপন করবেন না তাহলে আপনিই নিজে ঝুঁকিতে পরবেন,পরিবারের অন্য সদস্যদের ঝুঁকিতে ফেলবেন এবং চিকিৎসক কে ঝুঁকিতে ফেলবন।আতংকিত হবেন না। পরিবারের একজন মাত্র আক্রান্ত শিশুর সেবা করবেন। আক্রান্ত কেউ বাথরুম ব্যাবহারের ভালো করে বাথরুম Sanitize করবেন।শিশু আক্রান্ত হলে শিশু বিশেষজ্ঞ সঙ্গে পরামর্শে বাসায় বা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব। নিজের বাসা বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে, ব্যাবহিত কাপড় প্রতিদিন ডেটল পানি দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। বর্তমানে শিশুদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই। Supportive Symptomatic চিকিৎসা ও Preventive measure নিতে হবে। জ্বর হলে জ্বরের ঔষধ, প্রয়োজন হলে অক্সিজেন, সর্দি কাশি হলে সর্দি কাশির ঔষধ ইত্যাদি। হাসপাতালে ভর্তি হলে ICU support লাগলে Remdesevir (FDA Suggestions ) ও Dexamethasone (NIH approved) emergency use করা যাবে।
ডাঃ মোঃ মশিউর রহমান রোগমুক্তি ক্লিনিক গোলকুঠি দিনাজপুর