বোলিংয়ে বিবর্ণ বাংলাদেশ!
দিনাজপুর বার্তা২৪স্পোর্ট// বোর্ড সভাপতি একাদশের ইনিংস মাত্র শেষ হল। সাংবাদিকরা উৎসুক স্কোর জেনে নেওয়ার জন্য। সেখানে হাজির হলেন বাংলাদেশের কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। চিন্তিত কোচ স্কোরারের কাছ থেকে জানতে চাইলেন, তাসকিন আহমেদদের বোলিং ফিগার।
প্রধান কোচের চেহারাই বলে দিচ্ছিল শিষ্যদের বোলিং নিয়ে কতটা অখুশি তিনি। মাঠে নিজেদের পরিকল্পনা মোটেও বাস্তবায়ন করতে পারেনি অতিথিরা।
কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠে বুধবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩৫৪ রান করে বোর্ড সভাপতি একাদশ। ম্যাচে লাইন-লেংথ পেতে অতিথি বোলারদের ভুগতে হয়েছে শুরু থেকেই। সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে বোর্ড সভাপতি একাদশ। একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে রানের পাহাড় গড়েছে স্বাগতিকরা।
তিন ওয়ানডের সিরিজের শ্রীলঙ্কা দলে থাকা চার ক্রিকেটার খেলছেন প্রস্তুতি ম্যাচে। তাদের তিন জন ব্যাটিংয়ে নেমেছেন, খেলেছেন সাবলীল ভাবে। কুসল জানিথ পেরেরা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা পেয়েছেন অর্ধশতক। নিজের মতো করেই খেলেছেন অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা।
বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান কুসল ৭৮ বলে চারটি চারে ৬৪ রান করে স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়েন। তার সঙ্গে ৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দিলশান মুনাবিরার অবদান ২১ বলে ২৪ রান। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলা তাসকিন আহমেদ এদিন নিজের লাইন-লেংথ খুঁজে পেয়েছেন কমই।
তাসকিনের শর্ট বলগুলো ছিল অকার্যকর। তার প্রথম ওভারেই মিড উইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকান মুনাবিরা। এসেছে আরও অনেক বাউন্ডারি। ডানহাতি পেসার ৬ ওভার বল করে ৫২ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট।
অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা খারাপ করেননি প্রথম স্পেলে। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। পেসারদের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় খেলার অভিজ্ঞতা তারই সবচেয়ে বেশি- ৪ ম্যাচ। রুবেল হোসেন খেলেছেন দুটি। ছুটিতে থাকা সাকিব আল হাসান খেলেছেন সর্বোচ্চ ৬ ম্যাচ।
শ্রীলঙ্কায় খেলায় অনভিজ্ঞতা চোখে পড়েছে সহজেই। শুভাগত হোম চৌধুরী, আবুল হাসান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনরা খুঁজে ফিরেছেন লেংথ। স্বাগতিকদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামনে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি তারা।
প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে আসা বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম চমৎকার বোলিং করেছেন। তাকে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই ফিরিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক মিলিন্দা সিরিবর্ধনেকে। মুশফিকুর রহিম ফিল্ডিং করেননি, উইকেটের পিছনে ছিলেন নুরুল হাসান। তিনিই গ্লাভসবন্দি করেন স্বাগতিক অধিনায়ককে।
তার আগেই ফিরে যান সান্দান বিরাক্কডি। নিজের প্রথম ওভারে তাকে ফিরিয়ে নিজের ভুল সংশোধন করেন সাইফুদ্দিন। এই অলরাউন্ডার কিছুক্ষণ আগেই জীবন দিয়েছিলেন বিরাক্কডিকে। বাঁহাতি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের ৫৪ বলে খেলা ৬৭ রানের ইনিংসটি গড়া ৮টি চার আর দুটি ছক্কায়।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত মুখ চতুরঙ্গা ডি সিলভাকে ফিরিয়ে দেন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য আসা আবুল হাসান। তার শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে বোল্ড হন লঙ্কান অলরাউন্ডার।
৫১ রান করে রান আউট হন ধনাঞ্জয়া। ৩৩ বলে ৪২ রান করে ফিরেন থিসারা। দাসুন শানাকা অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে।
দ্বিতীয় স্পেলে সুবিধা করতে পারেননি মাশরাফি। ছন্দে ফিরেন তৃতীয় ও শেষ স্পেলে। শেষ পর্যন্ত ৯ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। সবচেয়ে ভালো বল করেছেন সানজামুল, ৬ ওভারে ২৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট।
১০ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে শুভাগত, রুবেল ৭ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য আসা দুই বোলার হাসান ও সাইফুদ্দিন নেন একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বোর্ড সভাপতি একাদশ: ৫০ ওভারে ৩৫৪/৭ (মুনাবিরা ২৪, কুসল ৬৪, বিরাক্কডি ৬৭, সিরিবর্ধনে ৩২, ধনাঞ্জয়া ৫১, চতুরঙ্গা ২৮, থিসারা ৪২ শানাকা ২৬*, মদুশঙ্কা ১*; মাশরাফি ১/৬৬, তাসকিন ১/৫২, শুভাগত ০/৫৮, রুবেল ০/৫৭, মোসাদ্দেক ০/১৩, হাসান ১/৩৫, সানজামুল ১/২৭, সাইফুদ্দিন ১/৩৬)