
ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা ॥ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় চলতি মৌসুমে মরিচ ক্ষেতে ফল পচা বা টেপাপচা (অ্যানথ্রাক্সনোজ) রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগের কারণে গাছের মরিচ গাছেই পচে যাচ্ছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন উপজেলার মরিচ চাষিরা।
ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা কৃষক মরিচ চাষ করেছেন। তবে ক্ষেতের অধিকাংশ গাছেই এই রোগ আক্রমণ করেছে। আক্রান্ত গাছ গুলোতে আসা ফল পচে মাটিতে ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৪৪২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। চাষিরা বলেন, আমরা মরিচ চাষের জন্য অন্যের জমি ১০ হাজার টাকা মূল্যে চুক্তিতে মরিচের আবাদ করেছি। কিন্তু টেপাপচা রোগের কারণে ফলন্ত মরিচ গাছগুলো মারা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের বিঘা প্রতি ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ উঠানোই কঠিন হয়ে যাবে। মরিচ তুলতে না পারলে সার কীটনাশকসহ জমির মালিকের টাকা পরিশোধ করবো কিভাবে তা ভেবে পাচ্ছি না। কারো কোন পরামর্শ পাচ্ছি না। ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তাকেও পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা তো পথে বসে যাবো। কৃষি কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র দায়িত্বে থাকলেও সেটা নামে মাত্র।
অন্যদিকে একই চিত্র ১৪ নং রাজাগাঁও ইউনিয়নেও। কৃষকদের অভিযোগ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী হোসেন দায়িত্বে থাকলেও কৃষকের প্রয়োজনে এই কর্মকর্তাকে মাঠে পাওয়া যায় না।
মরিচ চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, এবার আমি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। কিন্তু টেপাপচা রোগে আমার সব মরিচ গাছেই পচে যাচ্ছে। পরামর্শের জন্য ইউনিয়ন কৃষি অফিসে গেলে কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। ফোন দিলেও পাওয়া যাচ্ছে না। মরিচ তুলতে না পারলে সার কীটনাশকের টাকা পরিশোধ করবো কিভাবে ভেবে পাচ্ছি না।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: আবু হোসেন জানান, ইতিমধ্যে ৪৪২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। আমাদের টার্গেট ৮০২ হেক্টর জমিতে চাষ করার। স্থানীয়ভাবে টেপাপচা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মরিচ ক্ষেত। তবে টেপাপচা রোগ থেকে কিভাবে ফলকে রক্ষা করা যায় সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।
কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষক মাঠে পাচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-পরিচালক বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। তবে বিষয়টি আমি দেখছি।