
স্টাফ রিপোর্টার ॥ দিনাজপুরের কৃতি সন্তান দেশ-বিদেশে খ্যাতি ও সুনাম অর্জনকারী আন্তর্জাতিক জিমন্যাষ্টিক স্বর্ন পদকপ্রাপ্ত ও বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির প্রশিক্ষক ও ডাইরেক্টর নাছরিন আক্তার বানু মিলু অবশেষে স্বামী কাজী আকরাম আলীর সাথে ভারতের কোলকাতা জেলার হাওড়া থনাধীন উলুবেড়িয়া কবর স্থানেই থেকে গেলেন। পিতামাতাহারা কন্যা কাজী আইরিন জান্নাত জানান, চলতি ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী বিকেএসপির প্রশিক্ষক ও ডাইরেক্টর স্বামী কাজী আকরাম আলীর টিউমার চিকিৎসার জন্য ভারতের কোলকাতায় যান। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ মে প্রশিক্ষক ও ডাইরেক্টার কাজী আকরাম আলী মৃত্যুবরণ করেন। কাজী আকরাম আলীকে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার কবরস্থানে দাফন করা হয়। শোকে স্ত্রী নাছরিন আক্তার মিলু কিডনী রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। স্বামীর মৃত্যুর পর ৪২ দিন পর স্ত্রী মিলু মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। ২৬ জুন হাওড়া উলুবেড়িয়া কবরস্থানে নাছরিন আক্তার বানু মিলুর দাফন সম্পন্ন করা হয়। দুই স্বামী-স্ত্রী বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির প্রশিক্ষক ও ডাইরেক্টর ছিল। তাদের বোড় মেয়ে কাজী আইরিন জান্নাতের বিয়ে হয়েছে স্কুল শিক্ষক শাওন চৌধুরীর সাথে, ছোট মেয়ে কাজী নুরিন জান্নাত গাজীপুর আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মৃত মিলুর বড় ভাই খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, আমার ছোট বোন মিলু স্কুল জীবন থেকেই খেলাধুলায় দুর্দান্ত ছিল। জিমন্যাষ্টিকে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জনসহ রোপ্য ও স্বর্ন পদকপ্রাপ্ত হয়। দিনাজপুর শহরের কসবা মহল্লায় নিজ বাড়িতে থেকে সেন্ট ফিলিপস হাই-স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে সরকারি কলেজ থেকে বিপিএড পাশ করেন নাছরিন আক্তার বানু মিলু। বিপিএড পাশ করার পর এবং আন্তর্জাতিকভাবে পুরুস্কৃত হওয়ার পর সরকার বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে প্রশিক্ষক ও ডাইরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেন। বিকেএসপিতেই পরিচয় ঘটে বহুবিধ খ্যাতি অর্জনকারী প্রশিক্ষক ও ডাইরেক্টর কাজী আকরাম আলীর সাথে। একসময় দুজনের মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিছুদিনের মধ্যে জন্ম হয় দুই কন্যা সন্তান। অবশেষে স্বামী-স্ত্রীর সর্বশেষ ঠিকানা হলো কোলকাতা জেলার হাওড়া থানার উলুবাড়িয়া কবরস্থানে। দিনাজপুর ফুটবল এসোসিয়োশনের সভাপতি ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক গোলাম নবী দুলাল এক শোক বার্তায় বলেন, মিলু ক্রীড়া জগতের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। দুই স্বামী-স্ত্রী বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের ইতিহাসের একটি অংশ। তাদের মৃত্যুর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। তাদের মৃত্যুর খবরে দিনাজপুরে ক্রীড়া অঙ্গনসহ ক্রীড়ামোদি মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।