হাবিপ্রবি, দিনাজপুর: স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও ঐতিহাসিক মুজিব বর্ষে ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে (হাবিপ্রবি) “জ্যোতির্ময় স্মৃতিতে বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান বাংলাদেশ শীর্ষক” ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৮ আগস্ট ২০২১) বিকেল ৪ টায় ডিজিটাল প্লাটফর্ম (জুম ও ফেসবুক লাইভ) এর মাধ্যমে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। হাবিপ্রবির মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন মহান জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি। মুখ্য আলোচক হিসেবে ভার্চুয়ালী যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর ইমেরিটাস প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, সম্মানিত আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলো ও হাবিপ্রবির সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন ও হাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার। বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুর-ই- নাজমুন নাহার এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স‚চনা বক্তব্য রাখেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজ।
আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচক প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন বলেন, ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান এর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। সকলের জন্য একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়াই ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য। রাজনীতি ছিল জাতির পিতার রক্তে। দেশের মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে তিনি তার জীবন যৌবন সব বিলিয়ে দিয়েছিলেন। হাজারো জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছেন, বার বার যেতে হয়েছে কারাগারে। তরুণ প্রজন্মকে এসব ইতিহাস জানতে হবে, জানাতে হবে। অথচ ঘাতকদের কারণে এই মানুষটাকেই হারিয়ে ফেলেছি আমরা, মানব সভ্যতার ইতিহাসে অন্ধকারতম দিন হলো ১৫ আগস্ট।
মূখ্য আলোচক ইমেরিটাস প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, জাতির পিতার পুরো কর্মময় জীবন ত বিশাল নিয়ে এই স্বল্প সময়ে আলোচনা করা কিছুটা অসম্ভব। আমি আজ তার দুটি দিক শিক্ষা ও মানবিকতা নিয়ে আলোচনা করবো। পৃথিবীতে নন ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট এর কথা আসলে বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠত্ব সবার উপরে। ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ছিলেন সরকার প্রধান, রাষ্ট্রনায়ক, জননায়ক। পুরো সময়টা তিনি নন ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট এর মাধ্যমে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি নিজের জন্য কিছু করেননি। যা করেছেন সব দেশের মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ধারণ করতে পারলেই দেশ এগিয়ে যাবে’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একটি অবিচ্ছেদ্য নাম। এই অল্প পরিসরে জাতির পিতার জীবন, দর্শন, কর্ম ও রাজনীতিকে তুলে ধরা অত্যন্ত কঠিন। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে জনগনকে সম্পৃক্ত করে অধিকার আদায়ে রাজনৈতিক কর্মস‚চি চালাতেন বঙ্গবন্ধু। একারণে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে জীবনের সকল অধ্যায়ে সফল নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অনেকে তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন ও স্বাধীনতায় অবদানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালিয়েছে, এ ব্যাপারে নতুন প্রজন্মকে সজাগ থাকতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে তার জীবনাদর্শ। তিনি প্রত্যাশা রেখে আরও বলেন, হাবিপ্রবি তরুণ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আধার হিসেবে যে শীর্ষস্থান অর্জন করে আছে সেই সুখ্যাতি নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে পরবর্তী বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়। এ ধরণের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা সভা আয়োজনের জন্য তিনি মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপনি বক্তব্যে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট নিহত সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন জাতির পিতা প্রতিনিয়ত আলোকবর্তিকা হিসেবে আমাদের মাঝে আলো ছড়িয়েছেন। বর্তমানে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই আলোর মশাল হাতে নিয়ে অদম্য গতিতে বাংলাদেশ কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। পরিশেষে তিনি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী উপস্থিত সম্মানিত সকল অতিথি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক , কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ যুক্ত ছিলেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার ফেসবুক পেজে সরাসরি লাইভ দেখানো হয়, উক্ত ফেইসবুক লাইভে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও কর্মচারীবৃন্দ যুক্ত ছিলেন।