দিনাজপুর বার্তা২৪.কম :- জাতীয় সংসদের আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তার হয়ে সংসদে বাজেট বক্তৃতা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিট থেকে তিনি অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বাজেট বক্তৃতাটি পড়েন। এর আগে অর্থমন্ত্রী ৩টা ৭ মিনিটে তার বাজেট বক্তৃতা শুরু করার অনুমতি চাওয়ার সময় তিনি গুরুতর অসুস্থ এ কথা বলে মাঝে মাঝে বসে বলার অনুমতি চান স্পিকারের কাছে। স্পিকার তাকে অনুমতি দেন। তবে বাকি সদস্যদের অনুরোধে বসেই বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন তিনি। কিন্তু বাজেট বক্তৃতার সামান্য অংশ পড়েই তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে দুই বার বিরতি নেন। বিকাল পৌনে চারটার পর বিরতি নিয়ে তিনি আর বাজেট বক্তৃতা পেশ করার অবস্থায় না থাকলে অন্য কারও সহায়তা চান। এ সময় আগ্রহী হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বাজেট বক্তৃতাটি সংসদে পেশ করেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী যখন অর্থমন্ত্রীর হয়ে বাজেট বক্তৃতাটি পাঠ করেন তখন বেশ কয়েক বার লিখিত বক্তৃতায় তাকে ধন্যবাদ দেওয়া অংশ পাঠ করতে হয়েছে। শুরুতে এমন একটি পাঠ করে তিনি খানিকটা বিব্রতবোধ করে বলেন, ‘এটা অর্থমন্ত্রীর লিখিত বক্তৃতা পড়ছি। আমার বক্তৃতা হলে আমি নিজে নিজেকে ধন্যবাদ জানাতাম না।’ সংসদে তখন খানিকটা হাস্যরসের সৃষ্টি হলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জানি আপনি অর্থমন্ত্রীর লিখিত বক্তৃতা পড়ছেন। বক্তৃতায় যা লেখা আছে তাই পড়বেন।’ বিকাল চারটা ৪০ মিনিটে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা পাঠ শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বাজেটের অপঠিত অংশ পঠিত বলে গণ্য হবে বলে স্পিকার জানান। বাজেট পেশ শেষে অর্থমন্ত্রী অর্থ বিল উত্থাপন করেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থমন্ত্রীর হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাজেট পেশের ঘটনা দেশে এবারই প্রথম। অতীতে কখনোই এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অনুমোদন দেওয়া হলেও সে বৈঠকেও আধাঘণ্টা দেরিতে পৌঁছান অর্থমন্ত্রী। দুপুর ১টা ২১ মিনিটে বৈঠকে যোগ দেন তিনি। তখনও তাকে বেশ দুর্বল দেখা গেছে। এবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তাফা কামালের এটিই প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ। এটি দেশের ৪৮তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম বাজেট। প্রস্তাবিত নতুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের আকার চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে না পারা ও উন্নয়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকারের চেয়ে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ ও সংশোধিত বাজেটের আকারের চেয়ে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ বড়।