
দিনাজপুর বার্তা২৪ ডেক্স // সরকারি কোষাগারে ভ্যাটের টাকা জমা দিচ্ছে না বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অথচ মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো থেকে তা আদায় করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বকেয়া ভ্যাট বাবদ বিটিআরসির কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বকেয়া পড়েছে ৫১৯ কোটি টাকা। আর ওই টাকা পরিশোধে এনবিআর বিটিআরসিকে বার বার তাগিদ দিলেও সংস্থাটি তা আমলেই নিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিটিআরসির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এদেশে কর্মরত গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, সিটিসেল মোবাইল কোম্পানিগুলোর টুজি লাইসেন্সের আওতায় স্পেকট্রামের সর্বশেষ কিস্তির ভ্যাট বাবদ বিটিআরসির কাছে এনবিআরের পাওয়া দাঁড়িয়েছে ২৬৯ কোটি টাকা। ওই বকেয়া পরিশোধের তাগিদ দিয়ে বিটিআরসির কাছে ২০১৪ সালের ৩১ মে চূড়ান্ত দাবিনামা পাঠানো হয়েছিল। তাছাড়া ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর আবারো মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বিধিমালার ১৯৯১ এর বিধি ৪৩ এর আওতায় দ্বিতীয় নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও অর্থ পরিশোধের বিষয়ে বিটিআরসির তরফে থেকে এনবিআর কোনো সাড়া পায়নি। তাছাড়া বিগত ২০১৬ সালে থ্রিজি লাইসেন্সের ভ্যাট সঠিকভাবে পরিশোধ না করায় চলতি মার্চ মাসের ৭ তারিখে বিটিআরসির কাছে আরো ১৬১ কোটি টাকার একটি দাবিনামা পাঠিয়েছে এনবিআর। মোবাইল কোম্পানি এয়ারটেল ও রবি একীভূত হওয়ায় তারা ৪৬০ কোটি টাকা বিটিআরসিকে পরিশোধ করতে হবে। তার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত করলে অঙ্কটা দাঁড়াবে ৫২৯ কোটি টাকা। রবি ইতিমধ্যে ৩৭০ কোটি টাকা বিটিআরসিকে পরিশোধ করেছে। কিন্তু রবি এয়ারটেল-এর সাথে একীভূত হওয়ায় ভ্যাট বাবদ এনবিআরকে বিটিআরসির ৬৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু বিটিআরসি তা করেনি। ফলে বিটিআরসির কাছে এনবিআরের ওই ৬৯ কোটি টাকা পাওনা রইল।
সূত্র জানায়, বিটিআরসির কাছে টুজি ও থ্রিজি সার্ভিস চালুর জন্যে এনবিআরের ৪৭০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। আর রবি একীভূত হওয়ায় ভ্যাট বাবদ আরো বকেয়া রয়েছে ৬৯ কোটি টাকা। ওই পাওনা পরিশোধের জন্য সরকারি এই সংস্থাটিকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও বিটিআরসি কোনো কর্ণপাত করছে না। সর্বশেষ চলতি মাসে এনবিআরের চেয়ারম্যান বরাবরে বিটিআরসির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখন চেয়ারম্যান মহোদয় অনুমতি দিলেই সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে।
এদিকে বকেয়া ভ্যাট পরিশোধ না করা প্রসঙ্গে বিটিআরসির সচিব মো. সরওয়ার আলম জানান, সংস্থার হিসাব বিভাগের সাথে কথা না বলে কিছু জানানো যাচ্ছে না। তাই বকেয়ার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে এনবিআরের চেয়ারম্যান মো.নজিবুর রহমান জানান, বিটিআরসির কাছে এনবিআরের অনেক বকেয়া পড়েছে। বকেয়া পরিশোধে বারবার তলব করা হলেও তারা বিষয়টি নিয়ে মোটেও আগ্রহী নয়। শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে বকেয়া পড়ে থাকলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থতার গ্লানি সইতে হয়। সম্প্রতি এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট থেকে বিটিআরসির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি পাওয়া গেছে। আর ওই চিঠি দেয়া মানে এনবিআরকে অবহিত রাখা। তবে সরকারের বকেয়া রাজস্ব আদায়ে যে কোনো কমিশনার যে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ক্ষমতা রাখেন। কেননা তা কমিশনারদের আইন-প্রদত্ত ক্ষমতা।