বিরল (দিনাজপুর) ॥ বিরলের পল্লীতে একই রশিতে ফাঁস লাগিয়ে মর্মান্তিক এক প্রেম কাহিনীর সমাপ্তির মধ্য দিয়ে আত্মহত্যা করেছে প্রেমিক যুগল। মুসলিম পরিবারের প্রেমিক আর হিন্দু পরিবারের প্রেমিকা এই প্রেম কাহিনীর সমাপ্তি ঘটিযেছে।
পরিচয়ে জানা গেছে, উপজেলার পলাশবাড়ী ইউপি’র সাকইর গ্রামের ফুলদীঘি পাড়ার মৃত বাবুল হোসেনের পুত্র রকিব বাবু (১৭) এবং একই উপজেলার পার্শবতী বিজোড়া ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত হরিপদ পালের কন্যা পুর্ণীমা রাণী পাল (১৫)। রঘুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষাথী ছিল তাঁরাদু’জনে। প্রেমিক রকিব ভোকেশনাল শাখায় এবং গত ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন প্রেমিকা পূর্ণীমা রাণী পাল।
রকিবের দাদি তহমিনা বেওয়া (৬৫) জানান, গত বুধবার স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে রকিব বাড়িতে আসে। কাউকে কোন কিছু না বলে বিকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। রাতে বাড়িতে না আসায় অনেক খোঁজা খুজি করে পাওয়া কোথাও যায় নি। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার জনৈক এক ব্যাক্তি আমগাছের সাথে ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাদের দেখতে পায়।
এলাকাবাসিরা জানায়, রকিবের বাবা গত ৩ বছর আগে মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর হতে রকিব ও তাঁর ছোট বোন আয়শা মনি দাদির সাথে থাকতো। রকিব রাজমিস্ত্রি শ্রমিকের কাজ করে নিজের ও ছোটবোন আয়শা মনির পড়ালেখার খরচ যোগাত। দাদির সংসারে রোজগারের আর কেউ রইল না। সে (রকিব) হিন্দু পরিবারের মেয়ের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক করেছে। এ কথা কাউকেই জানায়নি। এলাকার কেউ বলতেই পারেনা। ভাই বোনদের মধ্যে রকিব তৃতীয়।
পলাশবাড়ী ইউনিয়নের নবাগত চেয়ারম্যান আব্দুস শুকুর জানান, তাদের ভালোবাসার সম্পর্কের বিষয় পরিবারের বা এলাকার কেউ জানতো না। বিজোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের একই কথা।
পূর্ণীমা রাণীর মা সুবারাণী (৭০) বলেন, তাঁর মেয়ে (পূর্ণীমা রাণী পাল) বুধবার সন্ধ্যার দিকে সকলের অজান্তে বাড়ি থেকে বাহির হয়। রাতে অনেক খোঁজা খুজি করে কোথাও কোন সন্ধ্যান পায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে লোকমুখে জানতে পারেন, সাকইর নামক গ্রামে একই রশিতে ছেলে-মেয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খরব পেয়ে বাড়ির লোকজন গিয়ে পূর্ণীমার লাশ সনাক্ত করে। তারাও তাদের প্রেম ভালোবাসার বিষয় কিছুই শুনে নাই। মেয়েটার বিয়ের আলোচনা চলছিল।
সংবাদ পেয়ে বিরল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইমতিয়াজ কবীর, উপ-পরিদর্শক পরিতোষ রায়সহ সংগীয় ফোর্স ঘটনাস্থল থেকে প্রেমিক যুগলের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রির্পোট শেষে উভয় পরিবারের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মজিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উভয় পরিবারের পক্ষ্যে থানায় পৃথক পৃথক অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।