
পার্বতীপুর সংবাদদাতা ॥ দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ভিক্ষুক সেঁজে প্রতারনার অভিযোগে আটক করা হয়েছে দুই প্রতারককে। ২৯ জুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় পার্বতীপুর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর বাজারপাড়া এলাকায় প্রতারনার সময় তাদেরকে হাতে-নাতে আটক করা হয়।
জানা গেছে, প্রতারকেরা ভিক্ষুক সেঁজে গ্রামগঞ্জে গিয়ে ছোট ছেলে-মেয়েদের মাথায় হাত দিয়ে বলে তোমরা ভাগ্যবান-ভাগ্যবতী। ছেলে-মেয়েদের কে বলে তোমাদের মা কোথায়, মাকে দেখিয়ে দিলে শুরু হয় ভিক্ষুকের কারিশমা। ভিক্ষুক সেঁজে মহিলা ও মেয়েদেরকে বলে তোমরা অনেক ধনী বা বড়লোক হবে। এভবেই বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক কথা বলে মানুষকে প্রতারনা করে আসছিল তারা। এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে ২৯ জুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার সময় উপজেলার ঈদগাহ্্ মাঠ সংলগ্ন গ্রামের ফেরদৌসের স্ত্রী কোহিনুর বেগমের সাথে। প্রতাকর চক্রের দুই সদস্য মোক্তার হোসেন (৬৫), পিতা- মৃত জনাব আলী ও লুৎফর রহমান (৬৬), পিতা- মৃত ফুলু সরকার বাড়ি পার্বতীপুর উপজেলার শেরপুর তেলীপাড়া, ভবানীপুর গ্রামে। কখনো জ্বীনের বাদশা কিংবা কখনো ভিক্ষুক সেঁজে প্রতরণার মাধ্যমে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতো তারা। কিছুদিন পূর্বে ভিক্ষুক ও প্রতারক মোক্তার হোসেন ফেরদৌসের স্ত্রীর নিকট থেকে নগদ ১৫শ টাকার বিনিময়ে বড়লোক বানানোর পাশাপাশি স্বর্র্ণালঙ্কার দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। প্রতারক মোক্তার ফেরদৌসের স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে বলে, পানি গরম করে লাল শালুক কাপড় দিয়ে গরম পানিটি একটি পাত্রে ঢেকে রাখলেই কয়েক ঘন্টার মধ্যে সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ অলঙ্কার পাওয়া যাবে। প্রতারকের পাল্লায় পড়ে কোহিনুর বেগম রাজি হয়ে কাজ গুলো সম্পূর্ণ করে। পরে কোহিনুর বেগম কয়েক ঘন্টা পার হলেও পাত্রটিতে কোন কিছুই না পেয়ে প্রতারক মোক্তার হোসেনের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মোবাইলটি বন্ধ পায়। এরই মধ্যে কোহিনুর বেগম দুরারগ্যব্যাধিতে মৃত্যুবরণ করেন। ২৯ জুন মঙ্গলবার সকালে সাড়ে ১১ টার দিকে প্রতারক ভিক্ষুক সেঁজে আবারো কোহিনুরের বাড়িতে আসলে স্বজনেরা তাকে দেখতে পেয়ে পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই দুই প্রতারককে হাতেনাতে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে শত শত নারীপুরুষ তাদের দেখতে বাড়িতে ভীড় জমাতে থাকে।
পার্বতীপুর মডেল থানার এসআই মোঃ জসীম উদ্দিন দুই প্রতারককে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।