
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দফাদার পাড়া ও মাগুরমারী চৌরাস্তা গ্রামের হাজারো মানুষের বাড়িঘর ও কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহার উদ্যোগে মাত্র ২ ঘণ্টায় এমন জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে এ অঞ্চল বর্ষাকালে পানি বন্দি থাকতো। তবে কারণ হিসাবে ধারণা করা হত, ভিলেজ এগ্রোটেক লি. এর নিজস্ব কালভার্টকে। এই ২ গ্রামের মানুষের অভিযোগ ছিল, বর্ষার পানি উত্তর দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণের দিকে যেত কিন্তু এগ্রোটেক লি. এর মূল ফটকের প্বার্শ্ববর্তী রাস্তার ব্রিজের সামনে একাধিক ছোট ছোট কালভার্ট নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক গতিপথকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ফলে প্রতি বর্ষামৌসুমে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুইটি গ্রামের প্রায় কয়েক শতাধিক বাড়িতে উঠেছে পানি। গ্রামের রাস্তাঘাট পানি দিয়ে ভরাট। পানি বন্দি রয়েছে হাজার হাজার মানুষ। ফসলের জমি তলিয়ে গেছে। আগাম ধানের বীজ ও চারাসহ ডুবে গেছে এতে ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পরেছে সাধারণ কৃষক।
উপজেলার ৭ নম্বর দেবনগড় ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান ছলেমান আলী মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহাকে বিষয়টি অবগত করেন। খবর পেয়ে চেয়ারম্যান ছলেমান আলীকে সঙ্গে নিয়ে দফাদার পাড়া গ্রামে অবস্থিত ভিলেজ এগ্রোটেক লি. এর নির্মিত কালভাটটি পরিদর্শন করেন ইউএনও। পরে তার উপস্থিতিতে পানির গতিপথ স্বাভাবিকের জন্য কালর্ভাট ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এতে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে পানির স্বাভাবিক গতি পথ ফিরে পায় এবং পানিতে ডুবে থাকা কয়েকশ একর ফসলি জমি রক্ষা পায়।
উপজেলার ৭ নম্বর দেবনগড় ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, ‘আমি যখন দেখলাম হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি তখনি আমি ইউএনও মহাদয়কে অবগত করি। পরে তিনি আসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেন।’
ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়। এসময় এগ্রোটেক লিমিটেডের কিছু স্থাপনার কারণে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়েছে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। পরে পানির স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিরে আনতে কোম্পানির একটি ব্রিজ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এখন সেখানে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ চলছে। আর সেখানে কোনো জলাবদ্ধতাও নেই। আগামীতে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।